কাউন্সিলরকে দুষছেন নিহত শুভলগ্নার বাবা

খুনের আগে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় শুভলগ্নার বাবা তুষারবাবু ও মা শুভ্রাদেবীকেও। রাতেই পুলিশ বছর ঊনচল্লিশের সুলতানকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ কোন্নগর হাইস্কুল লাগোয়া পার্ক থেকে খুনে ব্যবহৃত রিভলভারটি উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, শুভলগ্নাকে খুনের পরে সে মাথায় গুলি করে মরতে চেয়েছিল। কিন্তু রিভলভার ‘লক’ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:৫৫
Share:

শুভলগ্না চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র।

মাথায় মোটা ব্যান্ডেজ। মাঝে মাঝেই কুঁকড়ে উঠছেন যন্ত্রণায়। ঘরের নানা জায়গায় তখনও রক্তের দাগ। সে দিকে চোখ পড়লেই বিড়বিড় করছেন, ‘‘ওটা মেয়ের রক্ত। কাল এই সময়েও বেঁচে ছিল।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার পাশের পাড়ার শেখ সুলতান আলির গুলিতে খুন হয়েছে মেয়ে শুভলগ্না (৩৩)। কোন্নগরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, তুষার চক্রবর্তী এ জন্য দুষলেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর চিত্রা মুখোপাধ্যায়কেই। তুষারবাবুর অভিযোগ, ‘‘সুলতান মেয়েকে উত্যক্ত করত। অভিযোগ জানানোয় পুলিশ দু’বার ধরেও ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর না-ছাড়ালে আমাকে হয়তো এই দিন দেখতে হত না!’’

খুনের আগে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় শুভলগ্নার বাবা তুষারবাবু ও মা শুভ্রাদেবীকেও। রাতেই পুলিশ বছর ঊনচল্লিশের সুলতানকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ কোন্নগর হাইস্কুল লাগোয়া পার্ক থেকে খুনে ব্যবহৃত রিভলভারটি উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, শুভলগ্নাকে খুনের পরে সে মাথায় গুলি করে মরতে চেয়েছিল। কিন্তু রিভলভার ‘লক’ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বছর পাঁচেক আগে ওই যুবকের সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছিল এমএ পাশ শুভলগ্নার। সুলতান উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ইট-বালির ব্যবসা করত। শুভলগ্না বাপের বাড়িতে থাকতেন। সম্প্রতি তাঁর ফের বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়। শুভলগ্নাও ওই যুবকের সঙ্গে বিচ্ছেদ চাইছিলেন। তা নিয়ে গোলমাল চলছিল। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার মতে, হতাশা থেকেই সুলতান ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

তুষারবাবু জানান, সুলতান আগে সিপিএম করত। বর্তমানে সে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘কাউন্সিলর ফেসবুকেও ছেলেটাকে মদত দিতেন। তিনি লিখতেন, চালিয়ে যা। এটা করে কী লাভ হল ওঁর?’’

অভিযোগ মানেননি চিত্রাদেবী। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘সুলতানকে আমি ছাড়াতে যাব কেন? ফেসবুকেও কিছু লিখিনি। ওঁরা হয়তো হতাশা থেকে এ সব বলছেন। সুলতান আমায় সমস্যার কথা বলেছিল। আমি গোলমালে না-থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলাম, মেয়েটির বাবা-মা চাইছেন না, থাকিস না। কিন্তু ও শোনেনি। নিহতের পরিবারও আমায় কিছু জানায়নি। সুলতানের চরম সাজা হওয়া উচিত।’’ তুষারবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর দু’বার সুলতানকে আটক করা হয়েছিল। তার পরিবারের লোকেরা মুচলেকা দেওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement