পিতার অনুপস্থিতিতে মানিকতলা বিধানসভার যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শ্রেয়া।
রবিবার মুম্বাইয়ে প্রয়াত হয়েছেন মানিকতলার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। মানিকতলায় কে হবেন সাধনের উত্তরসূরি, তা নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে। এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন তাঁর কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডে। তৃতীয় বার রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শরীর খারাপ হতে শুরু করেছিল সাধনের। কলকাতায় চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। গত জুলাই মাসে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য সাধনকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ে। রবিবার সেখানেই মারা যান তিনি।
পিতার অনুপস্থিতিতে মানিকতলা বিধানসভার যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শ্রেয়া। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠন সামাল দেওয়া থেকে শুরু করে বিধায়ক পিতার হয়ে এলাকাবাসীকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনিই। গত বছর ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল শহিদ দিবসের সমাবেশ হোক বা ২৮ অগস্টের ছাত্র পরিষদের ভার্চুয়াল সভা, সব কিছুতেই মানিকতলা তৃণমূলের নেতৃত্বে দেখা গিয়েছে শ্রেয়াকে।
উত্তর কলকাতায় সাধন বনাম পরেশ পালের দ্বন্দ্ব কারও অজানা নয়। সতীর্থ হলেও, এই দুই শিবিরের নেতাদের লড়াই দীর্ঘদিনের। সাধন অসুস্থ হয়ে পড়লে, বাবার অনুগামীদের নেতৃত্বে আসেন শ্রেয়া। তাতেও দ্বন্দ্ব বন্ধ হচ্ছিল না। এরই মধ্যে গত ডিসেম্বর মাসে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে প্রার্থী হন পরেশ। তা-ও আবার মানিকতলা বিধানসভার অধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। এর পর দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রমাদ গুনেছিল উত্তর কলকাতা তৃণমূলের একাংশ। কিন্তু পরেশের মনোনয়নের দিন হাজির থেকে দ্বন্দ্ব কমার ইঙ্গিত দেন শ্রেয়া। তাঁর এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিল উত্তর কলকাতা তৃণমূলের একাংশ। উত্তর কলকাতা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘শ্রেয়া মানিকতলা সামলানোর পাশাপাশি, যে ভাবে মানিকতলা, বরতলা, বেলেঘাটা এলাকায় দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কমাতে উদ্যোগী হয়েছে, তাতে সাধনদার জায়গায় শ্রেয়া প্রার্থী হলে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’’
লাগাতার মানিকতলার জনতাকে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি বাবার অনুগামীদের নেতৃত্ব দিয়ে দলীয় দ্বন্দ্ব রোখার চেষ্টার কারণেই বাবার আসনে শ্রেয়ার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে যত দিন না উপনির্বাচন ঘোষণা হচ্ছে, তত দিন এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না শ্রেয়ার অনুগামীরা। তাঁদের আশা, গত প্রায় এক বছরের বেশি সময় শ্রেয়া যে ভাবে মানিকতলাকে সামলেছেন, তাতে দলের কাছে বিকল্পহীন প্রার্থী হিসেবেই উঠে আসতে পারেন শ্রেয়াই।