শঙ্কর আঢ্য। —ফাইল চিত্র।
জেলে বসে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষ। এ বার রেশন দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যের অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে দিয়ে জোর করে কিছু নথিতে সই করিয়েছেন ইডি-র অফিসারেরা। জেল থেকেই নিম্ন আদালতের বিচারকের কাছে চিঠি লিখে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। শনিবার কলকাতার বিচার ভবনে বিশেষ সিবিআই (পিএমএলএ) কোর্টে শঙ্করকে হাজির করানো হয়েছিল। সেখানেই তাঁর আইনজীবীরা জেলে বসে লেখা ওই চিঠির প্রসঙ্গ তোলেন। ইডি-র আইনজীবীরা জানান, এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাই এ ব্যাপারে শুনানির জন্য অন্য দিন ধার্য করা হোক। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এ ব্যাপারে শুনানি হবে বলে বিচারক জানান।
এ দিন শঙ্করের আইনজীবীরা অবশ্য জামিনের আর্জি জানাননি। তবে যাঁর চিঠির সূত্রে শঙ্করের খোঁজ পেয়েছিল ইডি সেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের তরফে জামিনের আর্জি কোর্টে জানানো হয়েছিল। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সেই আবেদনেরও শুনানি হতে পারে বলে কোর্ট জানিয়েছে। শঙ্করকে এ দিন আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত ফের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তলের লেখা চিঠি রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। প্রসঙ্গত, ওই চিঠির সূত্রেই গোটা বিষয়টির সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়ায়। কারণ, অধুনা বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের অভিযোগ, তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলিয়ে নেওয়ার জন্যই ইডি-সিবিআই নির্যাতন করেছিল। শঙ্করের চিঠিতে তেমন কোনও প্রসঙ্গ আছে কি না, তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। বরং এ ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র চিঠিতেই শঙ্কর এই মামলায় জড়িয়ে গিয়েছেন। ইডি দাবি করেছে, শঙ্করের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবসার মাধ্যমেই রেশন দুর্নীতির টাকা পাচার হয়েছে।
এ দিন শঙ্কর কোর্টে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। তিনি বিচারককে বলেন, ‘‘আমার একটি কিডনি নেই। হার্টের ধমনীতে ৭০ শতাংশ ব্লকেজ রয়েছে। আমি অসুস্থ। সংশোধনাগারে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা হচ্ছে না।’’ এ ব্যাপারে বিচারক লিখিতভাবে আবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।
এ দিন ইডি-র বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শঙ্করকে প্রশ্ন করলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘ভগবান আছেন। তিনি সব বিচার করবেন।’’