খেমাশুলিতে কুড়মি অবরোধ রেল অবরোধ অব্যাহত। ফাইল ছবি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে কুড়মি অবরোধ রেল অবরোধ অব্যাহত। যার জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন দূরের রেলযাত্রীরা। নিজেদের অবস্থানে অনড় কুড়মিরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি না মানা হলে তাঁরা আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াবেন। যার জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রেল সূত্রে খবর, কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে শুক্রবার খড়্গপুর ডিভিশনে আপ-ডাউনের ৬৯টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল হয়েছে আপে ২৫টি এবং ডাউনে ১৭টি। সেই তালিকায় ভাস্কো ডা গামা-জসিডি এক্সপ্রেস, সেকেন্দ্রাবাদ-পটনা এক্সপ্রেস, এলটিটি-রাঁচী এক্সপ্রেস, আলাপ্পুঝা-ধানবাদ এক্সপ্রেস। বাতিল থাকছে দুরন্ত এক্সপ্রেসও। এ ছাড়াও আপ ও ডাউনে ৯টি করে প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডাউন লাইনের ৭টি ট্রেন। যার জেরে দূরদূরান্তের যাত্রীরা খড়্গপুরে পৌঁছে বিপাকে পড়েন। স্ত্রী সুমন ও পাঁচ বছরের সন্তানকে নিয়ে আসা বিকাশ কুমার বলছিলেন, “চাকরিসূত্রে হায়দরাবাদে থাকি। টাটানগরে বাড়ি যাচ্ছিলাম। খড়্গপুর থেকে ট্রেন পাচ্ছি না। পরিবার নিয়ে খুব বিপদে পড়লাম।” জামশেদপুরের ট্রাকচালক সাধু ভকত বলেন, “জলপাইগুড়িতে ট্রাক পৌঁছে দিয়ে ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলাম। বুধবার দুপুরে খড়্গপুর পর্যন্ত এসে আর ট্রেন পাইনি। স্টেশনেই পড়ে রয়েছি।” শনিবারও ১৫টি ট্রেন বাতিলের কথা জানিয়েছে রেল।
‘রেল টেকা, ডহর ছেঁকা’ কর্মসূচিতে বুধবার থেকে খেমাশুলিতে শুরু হয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ। মঙ্গলবার থেকে খেমাশুলিতে ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করছে কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)। কর্মসূচির গোড়া থেকেই খেমাশুলিতে রয়েছেন কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যনেতা রাজেশ মাহাতো। পৃথক ভাবে আন্দোলন শুরু হলেও দাবি একই— তফসিলি উপজাতি ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতি। এই দাবিতেই গত সেপ্টেম্বরে টানা ৬ দিন এই খেমাশুলিতেই চলেছিল জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ। এ বারের অবরোধে সরাসরি মহারাষ্ট্র-পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জট কাটাতে বুধবার খেমাশুলির অদূরে কলাইকুন্ডায় কুড়মি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। তবে রফাসূত্র বেরোয়নি।