আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন, ধর্ষণের মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় বুধবার কলকাতা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির তিন বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। সাক্ষ্য গ্রহণ পর্বের এ ছিল সপ্তম দিন।
প্রসঙ্গত, ৯ অগস্ট আর জি করের সেমিনার হল থেকে মৃতের নানা সামগ্রী, জামাকাপড়, একটি ভাঙা হেয়ার ক্লিপ এবং অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ব্লুটুথ সংগ্রহ করা হয়েছিল। তা ছাড়া মৃতের ময়না তদন্তের পর ভিসেরার নমুনা-সহ আরও নানা বায়োলজিক্যাল নমুনা কলকাতা পুলিশের তরফে কলকাতার কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। তিন বিশেষজ্ঞ নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। এবং নমুনার পরীক্ষা করেছিলেন। তাঁদেরই সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয় আদালতে। অভিযুক্তের রক্তের নমুনা ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।
নানা মহলে অভিযোগ, নমুনা সংগ্রহের বেশ কয়েক দিন পরে তা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ৯ অগস্ট নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ১৪ অগস্ট ওই সব নমুনা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সংগৃহীত নমুনা ফরেন্সিকের জন্য পাঠানোর ক্ষেত্রে তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও অদল-বদলেরও অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারীদের কথায়, ফরেন্সিক পরীক্ষার নমুনার অদল বদলের অভিযোগ তদন্তের আওতায় রয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের একাধিক সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের কথায়, বিশেষত রক্তের নমুনা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সংরক্ষণ করা না হলে ফরেন্সিক রিপোর্ট প্রভাবিত হয়। সেই কারণে কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে ওই সব নমুনা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় তা জানতে তিন বিশেষজ্ঞের সবিস্তার সাক্ষ্য গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল।
এ দিনও মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দুপুর সওয়া একটা নাগাদ বিশেষ গাড়িতে আদালতে নিয়ে আসা হয়। সঞ্জয়ের গাড়ির পিছনে প্রিজ়ন ভ্যান ছিল। গাড়ি থেকে সরাসরি সঞ্জয়কে আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন আদালত থেকে যাতায়াতের পথে সঞ্জয়ের কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। অভিযুক্তের দুই আইনজীবী এবং সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত সাক্ষ্য গ্রহণে উপস্থিত ছিলেন।