বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সমাবেশ। বৃহস্পতিবার ধর্মতলা চত্বরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
হাইকোর্টের অনুমতি পেয়ে পূর্ব ঘোষণা মতোই বৃহস্পতিবার ‘প্রতিরোধ সঙ্কল্প যাত্রা’ শুরু করে দিল রাজ্য বিজেপি-র যুব মোর্চা। আর ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়ে ফের ধাক্কা ফেল রাজ্য সরকার।
প্রতিরোধ সঙ্কল্প যাত্রা উপলক্ষে মোটরবাইক মিছিলের জন্য এ দিন জমায়েত হয়েছিল দিঘায়। সেই যাত্রা ঘিরে পুলিশের সঙ্গে যুব মোর্চার কর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় ধস্তাধস্তি ও তর্ক-বিতর্কের জেরে দিনভর সরগরম ছিল সৈকত শহর। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সমুদ্র থেকে ঘট ভরে যুব মোর্চার বাইক মিছিলের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়াল। তিনি গাড়িতে দিঘা ছাড়ার পরেই পুলিশ বাইক মিছিলের পথ আটকায়। তা-ই নিয়েই বাধে বচসা। ঘুরপথে কিছু বাইক চলে গেলেও শ’খানেক বাইক পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে পড়ে।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য প্রশাসনিক অসুবিধার কারণ দেখিয়ে যুব মোর্চার এই যাত্রার অনুমতি দিতে চায়নি পুলিশ-প্রশাসন। মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক র্যালির অনুমতি দিয়ে জানিয়ে দেন, সভা, সমিতি, মিছিল করার অধিকার সকলের রয়েছে। সেই জোরেই এ দিন সকালে নিউ দিঘার যুব আবাস মোড়ে মোটরবাইক মিছিলে উদ্যোগী হয় যুব মোর্চা। কিন্তু আদালতের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও সেই মিছিলে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘যারা আদালত এবং সংবিধানকেও মানে না, তাদের রাজনীতিতে থাকারই অধিকার নেই।’’
দিঘা যখন সরগরম, কলকাতায় তখন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে বিচারপতি বসাকের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারির আবেদনও জানায় তারা। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেয়নি। যাত্রার অনুমতিও আটকায়নি। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন নির্দেশ দিয়েছে, র্যালির তত্ত্বাবধানে থাকবেন আদালত নিযুক্ত এক স্পেশাল অফিসার। যিনি হাইকোর্টেরই এক আইনজীবী রবিশঙ্কর দত্ত। তবে একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে, র্যালি চলাকালীন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে স্পেশাল অফিসার সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে তৎক্ষণাৎ তা বন্ধ করে দেবেন।
দিঘার ঘটনায় পুলিশের অবশ্য ব্যাখ্যা, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে কয়েক জন বাইক আরোহীর হেলমেট ও কাগজপত্র না থাকায় তাঁদের আটকানো হয়েছিল। আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুনের হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে বলছি সতর্ক হোন। মিটিং-মিছিল করার গণতান্ত্রিক অধিকার সব দলের আছে।’’
কলকাতার ধর্মতলায় এ দিনই বিজেপি-র সংখ্যালঘু মোর্চার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সংখ্যালঘু-প্রীতি’কে কটাক্ষ করেন দিলীপবাবু এবং মুকুল রায়েরা।