হোয়াটসঅ্যাপের এই কথোপকথন নিয়েই বিতর্ক। বিজেপি-র প্রতিনিধিরা পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। নিজস্ব চিত্র।
একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। ‘বিজেপি কোর মেম্বার্স’ নামে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের একটি স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। যদিও এর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল। সেই স্ক্রিনশটটি নিয়েই বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল।
ওই স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি-র সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ, দুই বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় ওরফে কাল্টু, নরহরি মাহাতো, বিজেপি-র সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আলিম আনসারি এবং জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক বিবেক রাঙ্গার মধ্যে এক কথোপকথন। সেখানে বলা হচ্ছে, স্কুলে ত্রাণ শিবিরগুলোতে বেশি করে লোক ঢুকিয়ে দিতে হবে। ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়বে। আর যার দায় গিয়ে পড়বে রাজ্য সরকারের ঘাড়ে।
স্ক্রিনশটটি প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে আসরে নামে তৃণমূল। সাংসদ, বিধায়ক-সহ বিজেপি-র ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। যদিও জেলা বিজেপি-র সভাপতির দাবি, ‘‘এটা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এই নামে বিজেপি-র কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নেই।’’ ষড়যন্ত্র করেই তৃণমূলের কয়েক জন এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ বিদ্যাসাগরের।
বিষয়টি নিয়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব পুলিশ সুপারের কাছেও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ফেসবুকে গৌরব সিংহ নামে এক জনের অ্যাকাউন্টে ‘বিজেপি কোর মেম্বার্স’ নামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশটটি পোস্ট করা হয়েছে। দলকে কালিমালিপ্ত করতে এবং জেলা নেতৃত্বকে চক্রান্ত করে ফাঁসাতে এই ধরনের পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এর সঙ্গে বিজেপি-র কোনও যোগ নেই। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য লড়ছে। তার মধ্যে জেলায় ইয়াস মোকাবিলায় বিজেপি যে সব ত্রাণ শিবির তৈরি করেছে সেখানে যাতে মানুষ না যায়, তাঁদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিতেই এই ধরনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বিজেপি-র জেলা সভাপতি বলেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। এই ধরনের অপরাধমূলক কাজের যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, যদি এর জন্য দাঙ্গা বাধে, তার জন্য দায়ী থাকবে সরকার।” তিনি আরও জানান, অবিলম্বে এই অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ধর্নায় বসবেন।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও বলেন, “রাতে এই চ্যাটটা পেয়েছি। একটাই মন্তব্য করতে চাই, ছিঃ, বিজেপি ছিঃ। পুলিশ সুপারকে বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে। যদি বিষয়টি সত্যি হয়, তা হলে ছিঃ বিজেপি ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। যদি সত্য হয়, সত্যি হতেই পারে, কারণ বিজেপি এ রকম কাজ করতেই অভ্যস্ত।”
পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভা মুরুগন বলেন, ‘‘দু’তরফের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’