প্রতীকী ছবি।
মহার্ঘ ভাতা মামলায় রাজ্য সরকার এ বার সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি জানাল। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, সোমবার এই মামলার শুনানি হবে।
কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আজ রাজ্য এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছে। রাজ্যের হয়ে আইনজীবী হুজ়েফা আহমদি জানিয়েছেন, হাই কোর্টের রায়ের বড় রকমের আর্থিক প্রভাব পড়বে। প্রধান বিচারপতি জানান, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ডিএ-র ফারাক এখন ৩৫ শতাংশ। গত মে মাসে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তখন কেন্দ্র ও রাজ্যের ডিএ-র ফারাক ছিল ৩১ শতাংশ। তা মেটাতে গেলে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে নবান্ন রাজি হয়নি। রাজ্য সরকার ওই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায়। কিন্তু হাই কোর্ট সেপ্টেম্বর মাসে সেই আর্জি খারিজ করে দিয়ে মে মাসের রায়ই বহাল রাখে। হাই কোর্টের রায় ছিল, মহার্ঘ ভাতা কর্মচারীদের অধিকার। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার অনুযায়ী ডিএ দিতে হবে। তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। তার পরেও অবশ্য ডিএ মেটানোর বিষয়ে পদক্ষেপ করেনি রাজ্য। উল্টে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। ইতিমধ্যে কেন্দ্র ফের ডিএ বাড়িয়েছে। ফলে এখন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ডিএ-র ফারাক ৩৫ শতাংশ।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অভিযোগ ছিল, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে, এই যুক্তি দেখিয়ে সময় ব্যয় করতে চাইছিল রাজ্য প্রশাসন। তাঁরা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন। গত ৯ নভেম্বর হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, ডিএ মেটানোর নির্দেশ কার্যকর করার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে অন্তহীন সময় দেওয়া যায় না। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পদক্ষেপ করতে হবে।
রাজ্য সরকারি সূত্রের খবর, হাতে সময় ফুরিয়ে আসছে দেখেই আজ রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে। মামলার আবেদনে যে সব ত্রুটি ছিল, সেগুলোও সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে। উল্টো দিকে রাজ্য সরকারি কর্মীরাও সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের জন্য তৈরি। ইতিমধ্যেই তাঁরা শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট করে রেখেছেন, যাতে তাঁদের বক্তব্য না শুনে আদালত কোনও ফয়সালা না করে। তাঁরা মনে করছেন, রাজ্য প্রশাসন মূলত হাই কোর্টের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ আদায় করতে চাইবে।