অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় তাঁকে শিলংয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তারা কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে আবার নোটিস দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাতে পারবে কি না, কলকাতা হাইকোর্ট কাল, শুক্রবার তা জানাতে পারে।
আইনজীবীদের একাংশের মতে, সিবিআই শেষ পর্যন্ত রাজীবকে হেফাজতে নিতে পারবে কি না, শুক্রবার সেটাও অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির তছরুপ মামলাতেও এক বার রাজীবকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
সারদা মামলায় সিবিআইয়ের নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত মে মাসে হাইকোর্টে মামলা করেন রাজীব। বুধবার বিচারপতি মধুমতী মিত্রের এজলাসে সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী ইয়েডেজার্ড জাহাঙ্গির দস্তুর জানান, বিচারপতি ওই মামলার রায় পরে ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ওই আইনজীবী একই সঙ্গে বলেন, ‘‘শুক্রবার মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা আছে।’’
মামলার শুনানিতে রাজীবের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছিলেন, সিবিআই তাঁর মক্কেলকে সাক্ষী করে পরে তাঁকে অভিযুক্ত করতে চাইছে। ফৌজদারি কোনও আইনে কোনও সাক্ষীকে অভিযুক্ত করা যায় না। ওই আইনজীবী আরও জানান, শিলংয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাজীব অনেক প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে সিবিআই। শিলংয়ে তাঁকে ৩৯ ঘণ্টারও বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার ভিডিয়ো রেকর্ডিং সিবিআইয়ের কাছে রয়েছে। সেই রেকর্ডিং আদালতে পেশ করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে।
রাজীব কুমার: ২০১৯
• ৩ ফেব্রুয়ারি: কলকাতার সিপি-র বাড়িতে সিবিআই।
• ৫ ফেব্রুয়ারি: সুপ্রিম কোর্ট জানাল, গ্রেফতার করা যাবে না। জিজ্ঞাসাবাদ হবে শিলংয়ে।
• ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি: শিলংয়ে ডেকে প্রশ্ন সিবিআইয়ের।
• ১৯ ফেব্রুয়ারি: সিপি-র পদ থেকে অপসারিত।
• ৫ এপ্রিল: হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই।
• ১৬ মে: লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লিতে।
• ১৭ মে: সিপি-র উপর থেকে যাবতীয় রক্ষাকবচ তুলে নিল শীর্ষ আদালত।
• ২৬ মে: ভোটের পরে রাজ্যে সিআইডি-প্রধান হিসেবে পুনর্বহাল।
• ৩০ মে: কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন। রক্ষাকবচ। শুনানি শুরু।
• ১১ সেপ্টেম্বর: হাইকোর্টে শুনানি শেষ। অপেক্ষা রায়দানের।
সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখনই ডেকে পাঠানো হচ্ছে, তখনই তিনি আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে সময় চাইছেন। ওই আইনজীবীর প্রশ্ন, রাজীব যদি নির্দোষই হবেন, তা হলে বারবার হাজিরা এড়াবেন কেন?
৩০ মে থেকে এত দিন ধরে সেই মামলারই শুনানি চলছিল। এই মামলা চলাকালীন রাজীবকে কোনও ভাবে গ্রেফতার করা যাবে না বলেও জানিয়ে এসেছে আদালত। এত দিনে শুনানি শেষ হল। শুক্রবার বিচারপতির নির্দেশের অপেক্ষায় দু’পক্ষই।