প্রতীকী ছবি।
সারদা-রোজভ্যালি মামলায় নতুন করে পুলিশ অফিসারদের তলব করছে সিবিআই। এ বার সিবিআইয়েরই দায়ের করা একটি চুরির মামলার সূত্রে দু’দিন হাওড়া পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তাদের। যা ঘিরে রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইয়ের ‘ঠান্ডা লড়াই’ বাড়ছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার রাঁচীর এক অফিসারকে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলে তদন্তকারী সংস্থার একটি দল। সেই মামলার সূত্রে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর খোঁজে শহরে আসে দিল্লির ওই দল। ওই ব্যবসায়ী রাঁচীতে বিশাল অঙ্কের টাকার খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করতেন। সিবিআইয়ের কলকাতা শাখার সাহায্যে গত ১৭ অগস্ট সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর জালান কমপ্লেক্স-এর অফিসে হানা দেয় তদন্তকারীরা। আটক করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে এবং তাঁর গাড়িতেই দিল্লির দলটি রাঁচী রওনা দিয়েছিল। সিবিআইয়ের অভিযোগ, হাওড়ার ফোরশোর রোড থেকে রাত পৌনে ১০টা হঠাৎ উধাও হয়ে যান ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর এক সঙ্গী। ব্যবসায়ীর গাড়িতে সিবিআই অফিসারের নথিপত্র বোঝাই যে ব্যাগ ছিল, সেটিও নিয়ে যান তাঁরা।
১৮ অগস্ট সিবিআইয়ের দিল্লির ওই অফিসার হাওড়া সদর থানায় গিয়ে চুরির মামলা করেন। হাওড়া পুলিশ যখন এই মামলা হাতে পায়, ঘটনাচক্রে, নিজাম প্যালেস সারদা মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ অন্য আইপিএসদের তখন চিঠি পাঠিয়েছে। ৩১ অগস্ট সিবিআইয়ের দিল্লির অফিসার সুশীল মিনা ও এস দাস’কে ডেকে পাঠায় হাওড়া পুলিশ। তাঁদের ওই ঘটনা নিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর ডাকা হয় সিবিআইয়ের কলকাতা শাখার ইন্সপেক্টর অমিতাভ দাসকে। তাঁকে সারাদিন আটকে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ তুলেছে সিবিআই।
পুরো ঘটনাক্রম নিয়ে কথা বলতে চাননি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার তন্মর রায়চৌধুরি। মেসেজেরও জবাব দেননি। সিবিআইয়ের এক মুখপাত্রের দাবি, ‘‘আমাদের হেনস্থা করতেই এই কাজ করেছে রাজ্য পুলিশ। আমরাই অভিযোগ করেছি, অথচ দোষীকে ছেড়ে আমাদের অফিসারদের ডেকে জেরা করা হচ্ছে। জেরায় সারাক্ষণ জানতে চাওয়া হয়েছে, সিবিআই কী ভাবে কাজ করছে। কে কী কাজ করছেন ইত্যাদি। যার সঙ্গে মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।’’
হাওড়ার এক পুলিশ আধিকারিক জানাচ্ছেন, চুরির ঘটনা ‘রহস্যে’ ভরা। পুলিশের প্রশ্ন, অভিযুক্তের গাড়িতে কেন রাঁচী যাচ্ছিলেন সিবিআই কর্তারা, ফোরশোর রোডেই বা কেন যান? খোওয়া যাওয়া ব্যাগ পরদিন কী ভাবে সিবিআই অফিসে পৌঁছল, তা-ও অজানা। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নিরপেক্ষ। বরং সিবিআইকে শাসকের তোতা বলেছে আদালত। ফলে অভিযোগ যাঁরাই করুন, তদন্তের স্বার্থে জানা দরকার আসলে কী হয়েছিল।’’