সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও রাজেশ কুমার
মুকুল রায়ের পরামর্শেই একদা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়ের আপ্ত সহায়ক হয়েছিলেন তিনি। মুকুল নিজে রেলমন্ত্রী হয়ে তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি) করে। তৃণমূলত্যাগী মুকুল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এহেন আইপিএস রাজেশ কুমারকে সিআইডি-র এডিজি পদ থেকে সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। যে সিদ্ধান্ত ঘিরে জোর জল্পনা রাজনীতির অলিন্দে।
রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মতে, ইদানীং একাধিক মামলায় মুকুল-ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তির নাম জড়িয়েছে। যেমন, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস মামলায় মুকুলের এক ঘনিষ্ঠ মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি, প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করেছে তাঁরই ঘনিষ্ঠ পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত নামে এক ব্যক্তিকে, খোঁজ চলছে সুজিত শ্যাম নামে আরও এক অনুগত ছাত্রনেতার। এই অবস্থায় মুকুল-ঘনিষ্ঠ অফিসার সিআইডি-র দায়িত্বে থাকলে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার বা খবর বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই রাজেশ কুমারকে তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের এডিজি-র পদে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তা ও মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন: গা ছাড়া কেন, নেতাদের প্রশ্ন করলেন অভিষেক
রাজেশ মুকুলের কতটা ঘনিষ্ঠ তা বোঝাতে একাধিক আমলা বলছেন, সাধারণ ভাবে আইএএসদেরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওএসএসডি নিয়োগ করা হয়। কিন্তু মুকুল সেই প্রথা ভেঙে আইপিএস রাজেশকে ওই পদে বসান। নবান্নের এক কর্তা বলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে রাজেশের গুরুত্ব আরও বাড়ে। তাঁকে দিল্লিতে রাজ্যের অতিরিক্ত রেসিডেন্ট কমিশনার করা হয়। বছর দেড়েক আগে সিআইডি-র দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজেশকে।
ওই কর্তা আরও জানান, একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধেও এখন তদন্ত করছে সিআইডি। যেমন, শিশু চুরির ঘটনায় জেরা করেছে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে, সমন পাঠিয়েছে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে, এমনকী, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ওই দলের প্রাক্তন বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যকে। মুকুল বিজেপিতে যাওয়ার পরে যাতে ওই সব তদন্ত একই গতিতে চলে, তাই চটজলদি এই পদক্ষেপ, বলছে নবান্নের একাংশ। প্রশাসনের অন্য অংশের অবশ্য দাবি, এটা নিয়মমাফিক বদলি।