প্রিন্সেপ ঘাটে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গীত উৎসব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে এ বার ‘গেরুয়া’ সঙ্গীত উৎসবের আয়োজন করছে সঙ্ঘ পরিবারের এক সাংস্কৃতিক মঞ্চ। আগামী ২০ জানুয়ারি কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে এই সঙ্গীত মেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গ সঙ্গীত উৎসব’। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির পৃষ্ঠপোষকতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন বলে জানা গিয়েছে। আর তার সঙ্গেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে, শহুরে ভোট টানতেই কি এই গানের মেলার আয়োজন শুভেন্দুদের? যদিও আয়োজকরা এর সঙ্গে রাজনীতির রংকে দূরেই রাখতে চেয়েছেন।
এই মেলার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছে সংস্কার ভারতী। আনন্দবাজার অনলাইনকে এক বিজেপি নেতা বলেন, “এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ‘কালচারাল লিটারেসি অফ বেঙ্গল’। সঙ্গীতের নির্দিষ্ট কোনও রং নেই। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের যে প্রাচীন সঙ্গীতের ধারা, যেমন মালদহের গম্ভীরা, পুরুলিয়ার ঝুমুর, বীরভূমের বাউল, পটের গান, এমন অনেক উপেক্ষিত সঙ্গীত ধারাকে বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতার বুকে নিয়ে আসার চেষ্টা মাত্র। সেই কাজে সকল সংস্কৃতিপ্রেমী, বিবিধ সংগঠন এক জায়গায় এসে একটি উদ্যোগ নিয়েছে। সেই উদ্যোগে শামিল হয়েছে সংস্কার ভারতী সাংস্কৃতিক সংগঠন।”
এটি যদি সাংস্কৃতিক মঞ্চই হয়, তা হলে শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারির মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা কেন থাকছেন? তা হলে কি এই অনুষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক রং রয়েছে? এ প্রসঙ্গে ওই নেতা বলেন, “যে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যে কোনও দল, মত, পন্থার মানুষ উপস্থিত থাকতেই পারেন। বিবিধ ধারার যে সংস্কৃতি বাংলায় আছে তার পুনর্জাগরণে সেই লক্ষ্যে আমাদের সকলের এই উদ্যোগ। এর সঙ্গে রাজনীতির মিল, মিশেল না করাই ভাল।”
ঘটনাচক্রে, কিছু দিন আগেই অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীত মেলা, ২০২৪। রাজ্যের তৃণমূল সরকার পরিচালিত এই মেলায় রাজনীতিকরণের অভিযোগ তোলে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ এক সাংস্কৃতিক মঞ্চ। জল্পনা শুরু হয়েছে, তা হলে কি প্রিন্সেপ ঘাটে অনুষ্ঠিত গেরুয়া শিবিরের বঙ্গ সঙ্গীত উৎসব কি রাজ্য সরকারের সঙ্গীত মেলার পাল্টা? যদিও উৎসবে রাজনীতির কোনও ছোঁয়া নেই বলেই দাবি আয়োজকদের। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কলকাতার বুকে বাংলা গানের উৎসবের আয়োজন করে শহুরে ভোট টানার চেষ্টার কৌশল গেরুয়া শিবিরের।