ভোট-চিত্র: মাস্ক ছাড়া লাইনে। ছবি: জীবন সরকার।
মাঝে মাঝে বৃষ্টির মধ্যেই মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে বৃহস্পতিবার ভোট হল মোটের উপরে শান্তিতেই। তবে দিনের শেষে শমসেরগঞ্জের ৯টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করলেন ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিয়ে প্রিজ়াইডিং অফিসার ও পুলিশের মদতে এই বুথ কার্যত দখল করে নেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।’’ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে ১৬২, ১৬৩, ১৬৮, ১৬৯, ১৭০, ১৭১, ১৭৪, ১৭৫ ও ১৮০ নম্বর বুথে পুনরায় ভোটের দাবি জানিয়েছেন জইদুর। তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “বিরোধীদের সে ভাবে দেখাই যায়নি কোথাও। হার নিশ্চিত জেনেই অভিযোগ তুলছে কংগ্রেস।” তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আশাবাদী, শমসেরগঞ্জে তাঁরাই জিতবেন। এ দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত শমসেরগঞ্জে ভোট পড়েছে ৭৮.৬ শতাংশ এবং জঙ্গিপুরে ৭৬.১২ শতাংশ।
এপ্রিলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বহরমপুরে দলীয় সভায় এসে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক সহ আরও কয়েক জন নেতাকে বহিষ্কার করেন তৃণমূলের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আনারুলকে সঙ্গে নিয়ে শমসেরগঞ্জের কংগ্রেসের প্রার্থী জইদুর রহমান এ দিন ভোরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জইদুরের দাবি, আনারুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য আনারুলকে গ্রেফতার করেছে। তবে বেলা বাড়লে ভোটে এই ঘটনার তেমন প্রভাব পড়েনি।
কিন্তু বেশির ভাগ ভোটের লাইনেই কোভিড বিধি মানা হয়নি। মাস্ক অনেকে পরেছিলেন, কিন্তু দূরত্ববিধি ছিল না। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন অভিযোগ ছাড়া, এ দিন সর্বত্রই আধা সামরিক বাহিনীর ভূমিকা ছিল কড়া। বুথের সামনে কোনও অবাঞ্ছিত লোক দেখলেই তেড়ে গিয়েছেন জওয়ানেরা। তার মধ্যেই আমিরুলের বিরুদ্ধে ভোটারদের লাইনে গিয়ে প্রচারের অভিযোগ উঠেছে। জঙ্গিপুরের একাধিক বুথেও ভুয়ো ভোট পড়েছে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস ও বামেরা। তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে।
সেই সঙ্গে, জঙ্গিপুরে এ দিন রাজনৈতিক সৌজন্যেরও নিদর্শন মিলেছে। জঙ্গিপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন ও বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাসের সঙ্গে পথে দেখা হলে তাঁদের কিছু ক্ষণ হাসি মুখে কথা বলতে দেখা যায়। সুজিতবাবু জাকিরের পায়ের অবস্থার খোঁজ নেন। জাকিরও বলেন, ‘‘যতই প্রতিদ্বন্দ্বী হই, আমাদের এখানে সুস্থ রাজনীতির পরিবেশ রয়েছে।’’