সাগরদিঘিতে উচ্ছ্বাস বাম এবং কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের। নিজস্ব চিত্র।
ঘোষিত হল সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল। তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২২,৯৮০ ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর একদা ‘গড়’ মুর্শিদাবাদেই খাতা খুলল কংগ্রেস। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনেও জয়ী হয়নি কংগ্রেস। তবে উপনির্বাচনে জয়ের পর এ বার রাজ্য বিধানসভাতেও প্রতিনিধি পাঠাতে চলেছে হাত শিবির। গত বিধানসভায় সাগরদিঘিতে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী, অধুনা প্রয়াত সুব্রত সাহা। সেই আসনে মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে দল প্রায় ২৩ হাজার ভোটে হারল কীভাবে, তা নিয়ে জোড়াফুল শিবিরেও চর্চা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ভোটের ফলে উজ্জীবিত বাম এবং কংগ্রেস শিবির। তাদের দাবি, জোট গড়ে লড়তে পারলে তৃণমূলকে হারানো সম্ভব।
১৪ রাউন্ড গণনার পরে জয়ের ব্যবধান আরও বাড়ালেন কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন। আপাতত ২২,৩২০ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। ১৪ রাউন্ডের পর তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৮০,৫৬৬। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৫৮,২৪৬।
সাগরদিঘিতে ১২ রাউন্ডের গণনার শেষে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন ২০,৯৯৬ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৭০,০৬৩ ভোট। তৃণমূলের ৪৯,০৬৭ এবং বিজেপির ২০,২১১।
সপ্তম রাউন্ডের শেষে ৮,৪৫৩ ভোটে এগিয়ে গেলেন কংগ্রেস প্রার্থী।
ষষ্ঠ রাউন্ড গণনার শেষে ৭,০৯০ ভোটে এগোলেন কংগ্রেস প্রার্থী। আপাতত কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৩৩,৯৬২। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ২৬,৮৭০।
পঞ্চম রাউন্ডের শেষে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ৫,০৯৩ ভোটে এগোলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। আপাতত কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ২৮,৫৯৩। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ২২,৪২৬। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৭,৮৯৯।
তৃতীয় রাউন্ডের গণনার শেষে ১,৯৩৯ ভোটে এগোলেন কংগ্রেস প্রার্থী। ব্যবধান কমাল তৃণমূল। তৃতীয় রাউন্ডের শেষে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ১৬,৪৯৬। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ১৪,৫৩৭। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৫০০০।
আবির খেলায় মাতলেন কংগ্রেস সমর্থকরা।
নির্বাচন কমিশনের তরফে যে পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে সাগরদিঘিতে কংগ্রেস প্রার্থী এখনও পর্যন্ত ৪৬.৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট শতাংশের হার ৩৭.৯। বিজেপি প্রার্থী ১২.৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
পর পর ২টি রাউন্ডে এগিয়ে যাওয়ার পর কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন জানালেন, তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। জনগণ রাজ্যের শাসকদলকে জবাব দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, “২টি অঞ্চল নিয়ে ভয় ছিল। সেখানে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। চিন্তার কোনও ব্যাপার নেই। আমরা সব জায়গাতেই এগিয়ে যাব। জনগণ জবাব দিয়েছেন। আমরা জিতলে কারও সঙ্গে আঁতাঁত করব না।”
দ্বিতীয় রাউন্ড গণনার শেষেও এগিয়ে রইলেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। আপাতত অনেকটাই পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল। তৃতীয় স্থানে বিজেপি।
গণনার শুরুতেই পোস্টাল ব্যালট গোনা হয়, গণনার শুরুতেই ৫১৫ ভোটে এগিয়ে গেলেন কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। তবে এখনও পোস্টাল ব্যালটের গণনা শেষ হয়নি।
শুরু হল সাগরদিঘিতে ভোট গণনা। সকাল ৮টা ২২ মিনিটে শুরু হয়েছে গণনা। ১৬ রাউন্ডের গণনার শুরুতেই বিশৃঙ্খলা। এসডিপিআই প্রার্থীর কাউন্টিং এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ।
গত সোমবার সাগরদিঘি বিধানসভায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৭৪ শতাংশ ভোট পড়ে। ভোটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনাও ঘটে। কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তোলে তৃণমূল। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থী মাফুজা খাতুনকে হারিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত সাহা। তৃতীয় স্থান পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় এক সময় জেলার রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি কংগ্রেসকে। তবে এ বার কংগ্রেস শিবিরের আশা, তারাই কিস্তিমাত করতে চলেছে। সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে বলে বাম-কংগ্রেস শিবিরের দাবি। তবে জয় নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয় শাসক তৃণমূল। তারা আপাতত জয়ের অঙ্ক নিয়েই ভাবনাচিন্তা করতে চাইছে। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই কেন্দ্র থেকে ‘অভাবনীয়’ সাড়া পেয়ে চমক দেওয়ার কথা বলছে বিজেপিও। এই আবহেই শুরু হয়েছে ভোটগণনা।