সাধন পাণ্ডে এবং ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
দল থেকে ‘খারাপ লোকদের’ বাদ দেওয়া উচিত বলে প্রকাশ্যেই মন্তব্য করে বসলেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আর তার জবাবে রাজ্যেরই অপর মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম বললেন, ‘‘ওঁর যদি কোনও বক্তব্য থাকে, তা হলে সেটা দলের অন্দরে জানান। বাইরে বলে ওস্তাদ হওয়ার কোনও দরকার নেই!’’ প্রসঙ্গত, গত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রবীণ নেতা ও মন্ত্রী সাধন দল নিয়ে প্রকাশ্যেই বিভিন্ন ‘বিড়ম্বনাসূচক’ মন্তব্য করছেন। এলাকাতেও বিভিন্ন সময়ে বিধায়ক পরেশ পাল বা অপর মন্ত্রী শশী পাঁজার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন সময় তাঁর বক্তব্য দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। কিন্তু প্রবীণ নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ায় তাঁর বিষয়ে দল প্রকাশ্যে সে ভাবে এতদিন কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু শুক্রবার ববি প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন, সাধনের দল সম্পর্কে কোনও বক্তব্য থাকলে তা দলের মধ্যেই বলতে হবে।
শুক্রবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাদিবসটি বিভিন্ন নেতা ও মন্ত্রী তাঁদের এলাকায় নিজেদের মতো করে পালন করেছেন। সেখানেই সাধন বলেন, ‘‘যারা খারাপ, তাদের দল থেকে বাদ দেওয়া উচিত।’’ স্বভাবতই তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন ছড়ায়। ববিও তাঁর এলাকায় ওই কর্মসূচিতে ছিলেন। সেখানেই তাঁকে সাধনের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে ববি বলেন, ‘‘সাধন’দার যদি কিছু বলার থাকে, তা হলে তা দলের মধ্যে বলা উচিত। বাইরে বলে ওস্তাদ হওয়ার কোনও দরকার নেই!’’ বস্তুত, ববির আরও বক্তব্য, এ ভাবে বাইরে দলের সম্পর্কে কথা বলে দলকে ‘ছোট’ করা হচ্ছে। সেটা অনুচিত।
সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের তালিকায় যে সমস্ত বিধায়ক বা মন্ত্রীর নাম নিয়ে জল্পনা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ইতিউতি সাধনের নামও ভেসে উঠছে। ওই প্রসঙ্গে সাধনের বিষয়ে কিছু না বললেও সামগ্রিক ভাবে বিজেপি-র ‘দল ভাঙানো’র প্রচেষ্টা নিয়ে ববি বলেছেন, ‘‘বিজেপি তিন রকম ভাবে দল ভাঙানোর চেষ্টা করছে। প্রথমত, ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানো। দুই, বিভিন্ন পদের প্রলোভন দেখানো এবং তিন, রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা। কিন্তু আমরা ওসবে ভয় পাই না।’’
আরও পড়ুন: লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে বার্তা মমতার
সাধন এবং সাধনের মতো দলের তথাকথিত ‘বিক্ষুব্ধ’দের নিয়ে ববির আরও বক্তব্য, ‘‘যা বলার দলের মধ্যেই বলা উচিত। সাধন’দা বা অন্য কারও যদি কিছু বলার থাকে, তা হলে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলবেন! সংবাদমাধ্যমে বলে তো কেউ খারাপ-ভাল হয় না। আর কে খারাপ, কে ভাল, সেটার বিচার কে করবে! করবেন দলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আছেন। তিনিই বিচার করবেন। সুতরাং, সাধন’দা শুধু নন। এমন যাঁরাই আছেন, তাঁদের উচিত যা বলার, দলের ভিতরে বলা। সংবাদমাধ্যমে বলে দলকে ছোট না করা।’’ ববির এই বক্তব্যের পর সাধন বা তাঁর মতো অন্যরা বাগ মানবেন কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তেমন না হলে দল সাধন বা তাঁর মতো অন্যদের বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেয় কি না বা কোনও আপস-আলোচনার পথে যায় কি না, সেটাও দেখার।