‘ভো-কাট্টা তোমার ভালোবাসা —২৫ পেরিয়ে’
গানের দুনিয়ায় তাঁর অবাধ বিচরণ। সঙ্গীতজগতে পেরিয়ে এসেছেন ২৫ বছরেরও বেশি। ‘এ তুমি কেমন তুমি’ থেকে শুরু করে ‘ভো-কাট্টা তোমার ভালোবাসা’ এরকম অসংখ্য গান রয়েছে রূপঙ্কর বাগচীর ঝুলিতে। পঁচিশের এই গৌরবময় যাত্রা উপলক্ষে ১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হল ‘ভো-কাট্টা তোমার ভালোবাসা —২৫ পেরিয়ে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই রূপঙ্কর বলেন, ‘‘আবেগ, অনেক অনেক ভালোবাসা, কিছু ঘৃণা, অনেক মানুষকে কাছে পাওয়া, কিছু সহযাত্রীর চূড়ান্ত অবহেলা, বেশ কিছু ভুল ও ঠিকের মাঝখানে হল আমার জীবন। আর এই সব কিছু নিয়েই আজকের এই অনুষ্ঠান।’’ প্রায় ২৮ বছর আগে, যখন গায়ক রূপঙ্কর প্রথম বাংলা সঙ্গীতজগতে আসেন, তখনের সময় ছিল একেবারেই অন্য রকম। গান রেকর্ডিং তখন অনেক ক্লান্তিকর ছিল। তিন চারটে গান রেকর্ড করতেই অনেক সময় লাগত। তাই প্রতিটি গানের নেপথ্যে আরও অনেক গল্প লুকিয়ে ছিল। সেই সব কিছুই রবীন্দ্র সদনে একক কনসার্টের পর রূপঙ্কর স্মরণ করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানটি দুটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম অংশে, রূপঙ্কর প্রায় এক ডজন গান গেয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল দু’ জন অ্যাকুস্টিক গিটারিস্ট। মুকুন্দ দাসের গান ‘ভয় কি মোরোনে’ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন রূপঙ্কর। গানের সংগ্রহে ছিল হেমন্ত মুখার্জি থেকে শুরু করে মোহাম্মদ রফি, মুকেশ, কবির সুমন, জগজিৎ সিং। বাদ পড়েনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিও।
একক কনসার্টের মঞ্চে রূপঙ্কর তাঁর গানের মাধ্যমে কবির সুমনকেও শ্রদ্ধা জানান। কবীর সুমনের সঙ্গে এক মঞ্চে গাইতে গাইতে সে দিন গায়ে কাঁটা দিয়েছিল তাঁর। জানিয়েছেন রূপঙ্কর। কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্টজন সঙ্গে রূপঙ্কর স্ত্রী চৈতালি। রূপঙ্কর বলেন, ‘‘আমি আজ যা কিছু তা চৈতালীর জন্যই এবং আমি এগিয়ে গিয়ে বলব যে আমি আজকে তার জন্যই বেঁচে আছি।’’
দ্বিতীয় পর্বে ছিল রূপঙ্করের জনপ্রিয় ২০টি গান। চাঁদ থেকে শুরু করে বৌদিমনি, চুপি চুপি রাত, প্রিয়তমা, রুপকথা, বেলাশেষে বাদ পড়েনি কোনওটাই। সব মিলিয়ে ছিল খুবই মনোমুগ্ধকর এক সন্ধে। রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে শ্রোতাদের আসন ছিল পূর্ণ। রূপঙ্করের সঙ্গে সেদিন গলা মিলিয়েছিলেন বহু শ্রোতা।
কনসার্টের শেষে রূপঙ্কর জানিয়েছেন, “আজ সন্ধ্যা থেকে আমি কখনই কিছু আশা করিনি, তবে আশা করেছিলাম যে আমার শ্রোতারা এসে গান শুনবেন। আর সেটাই হয়েছে। যাঁরা এসেছেন তারা গত ২৮ বছর ধরে আমার সঙ্গীত অনুসরণ করছেন এবং সবচেয়ে ভাল দিক হল তাদের সাথে পরবর্তী প্রজন্মের শ্রোতারাও এসেছেন। আমি খুবই আনন্দিত।’’