Bikash Ranjan Bhattacharya

প্রশাসনিক কাজও আদালতকে করতে হচ্ছে, ব্যাখ্যা বিকাশের

সকলের জন্য সম ভাবে প্রযোজ্য আইনের শাসন। কিন্তু বাংলায় পট পরিবর্তনের পরে এ রাজ্যের প্রশাসন ক্রমশ ‘দলমুখী বা ব্যক্তিমুখী’ হয়ে উঠেছে। সেই কারণেই বিহিত চাইতে বারংবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১২
Share:

বিকাশ ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে প্রতিবাদী বা আন্দোলনকারীদের হয়ে আইনি লড়াইয়ের অন্যতম মুখ তিনি। তাঁর জন্যই সরকারের নানা উদ্যোগ আটকে যাচ্ছে বলে প্রায়শই আক্রমণ করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রশাসকদের ‘ব্যর্থতা’র জন্যই আদালতকে এখন প্রশাসনিক কাজ করতে হচ্ছে বলে ব্যাখ্যা দিলেন আইনজীবী এবং সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য।

Advertisement

যে কোনও সভা-মিছিলের অনুমতি থেকে শুরু করে যে কোনও বিষয়েই যে এখন আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে, সেই প্রবণতার উপরেই এ বার সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রের শারদ-সংখ্যা। কলম ধরেছেন বিকাশ। তাঁর মতে, সাংবিধানিক গণতন্ত্রের মূল কথাই হচ্ছে আইনের শাসন। অর্থাৎ সকলের জন্য সম ভাবে প্রযোজ্য আইনের শাসন। কিন্তু বাংলায় পট পরিবর্তনের পরে এ রাজ্যের প্রশাসন ক্রমশ ‘দলমুখী বা ব্যক্তিমুখী’ হয়ে উঠেছে। সেই কারণেই বিহিত চাইতে বারংবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলকে।

সম্প্রতি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকে। সেই উদাহরণ টেনে বিকাশ লিখেছেন, কেবল আইনসম্মত নির্দেশ দেওয়াই নয়। উপাচার্য নির্বাচনের দায়ভারও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা নিয়েছেন। কারণ, দুই সাংবিধানিক কর্তৃত্ব রাজ্য সরকার ও রাজ্যপাল তাঁদের মধ্যে ‘ঝগড়া’ এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন যে, তাঁরা সহমত হতে পারেননি। ‘আইনের শাসন নয়, চলছে দলের শাসন, বাড়ছে আদালত নির্ভরতা’ শীর্ষক নিবন্ধে এই রকম অনেক দৃষ্টান্তই দিয়েছেন আইনজীবী-নেতা। পথ আটকে শাসক দলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ করতে দেওয়া হয় কিন্তু অন্য কেউ সেখানে বা বিশেষ কোনও নেতার বাড়ির আশপাশ দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়া, সভা করার অনুমতি পায় না প্রশাসনের কাছে, তুলেছেন সেই প্রসঙ্গ। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বহুল চর্চিত শিক্ষা দুর্নীতি উদঘাটনে আদালতের ভূমিকা সবিশেষ উল্লেখ করতে হয়। আদালসত দৃঢ় ব্যবস্থা না নিলে এত বড় সামাজিক অপরাধ মানুষের অগোচরেই থেকে যেত হয়তো’।

Advertisement

শারদ-সংখ্যায় নিজের নিবন্ধে বিকাশের ব্যাখ্যা: ‘সর্বক্ষেত্রেই আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করছে, প্রশাসন ও আইন-কর্তারা ব্যর্থ। আইন প্রণয়ন, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থা রাষ্ট্রের তিন স্তম্ভ। বিচারব্যবস্থার দায় হচ্ছে সংবিধান রক্ষা করা। প্রশাসন ও আইন সংবিধান সম্মত হল কি না, সেটা দেখার দায় বিচারব্যবস্থার। দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, আমাদের দেশে, বিশেষ করে, এ রাজ্যে আদালতকেই প্রশাসনিক কাজ করতে হচ্ছে। প্রশাসকদের বোঝা উচিত যে, তারা শাসক দলের কাছে মাথানত করে প্রকৃতপক্ষে আইনের শাসনকেই বিশ্বাসহীনতায় পৌঁছে দিয়ে গণতন্ত্রের বিপদ ডেকে আনছে’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement