গরুর গলায় বাঁধা লাল পুঁটুলি। তাতে ভরা আরডিএক্স-এর মতো ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক। কোনওটায় বা আগ্নেয়াস্ত্রর যন্ত্রাংশ। প্রেরক হাবড়ার রবিন মল্লিক। আর প্রাপক বাংলাদেশের জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর আলিম। তাই পুঁটুলির কাপড়ে কালো কালিতে ছোট করে এক দিকে লেখা ‘আর’, অন্য দিকে ‘এ’।
গত দশ বছর ধরে বসিরহাট থেকে বাগদা পর্যন্ত সীমান্ত বরাবর গরু পাচারের সঙ্গে জড়িয়েছিল রবিন মল্লিকের নামটি। কিন্তু ফোনে আড়ি পাততে পাততে এক সময়ে বিস্ফোরক ও অস্ত্র পাচারের তথ্যটিও পুলিশের নজরে আসে। এর পরেই টানা আট মাস নজরদারি চালিয়ে ২০১৪-র ২৯ জানুয়ারি অস্ত্র ও ৯ কেজি ২০০ গ্রাম শক্তিশালী বিস্ফোরক-সহ রবিনকে ধরে ফেলে নিউটাউন থানার পুলিশ। বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। মামলা শেষে বৃহস্পতিবার রবিন মল্লিককে ১০ বছর কারাদণ্ড দিলেন বিচারক।
পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন জেরা করে কয়েক জনের নাম জানতে পারেন তদন্তকারীরা। ঘটনাচক্রে, ওই বছর ২ অক্টোবর খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েক জনের নামের তালিকাও রবিনের কাছ থেকে পেয়েছিল পুলিশ। গ্রেফতার হওয়ার পরে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন রবিন কয়েকটি বিস্ফোরণের ছকের কথা জানালেও নির্দিষ্ট জায়গার নাম তার কাছ থেকে মেলেনি বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন। খাগড়াগড় কাণ্ডের কথা রবিনের অজানা ছিল না বলেও তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন। তত দিনে অবশ্য মামলার চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছিল ব্যারাকপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ দ্বিতীয়র কাছে।
সরকারি আইনজীবী অসীম দত্ত বলেন, ‘‘রবিন মল্লিক ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিস্ফোরক পাচারের অন্যতম প্রধান মাফিয়া ছিল। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ও জেএমবি-র সঙ্গে সরাসরি যোগসাজসও ছিল তার।’’ তাঁর দাবি, এই মামলা উত্তর ২৪পরগনায় আগে হয়নি। পুলিশ তৎপর হওয়ায় রবিনের সাজা হল।