দুর্গামূর্তির পাশাপাশি চারদিনই পুজো হয় সারদা মায়েরও।
স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিধন্য এই গ্রাম। এখানে তাঁর আদর্শে গড়ে ওঠা আশ্রমে দুর্গাপুজো হয় তাঁরই নীতি মেনে। পুজো চলাকালীন প্রতিমার ডান দিকে থাকে মা সারদার মূর্তি। দেবী দুর্গার সঙ্গেই পূজিত হন তিনিও। আমতার খড়িয়পে শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমবিহার আশ্রমের রীতি এমনই।
খড়িয়প গ্রামের বিখ্যাত জমিদার ছিল বসু পরিবার। এই পরিবারে বিয়ে হয়েছিল স্বামী বিবেকানন্দের এক বোনের। সেই সূত্রে একবার বোনের শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন বিবেকানন্দ। ১৯৮৫ সালে বসু পরিবার, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমবিহার আশ্রম কর্তৃপক্ষকে আশ্রম গড়তে কুড়ি বিঘা জমি দান করেন। ঠাকুর রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ এবং সারদা মায়ের আদর্শেই এই আশ্রমের পথ চলা শুরু।
আরও পড়ুন: পুজো ঘিরে মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোরেগাঁওয়ের কালী মন্দির
১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজো। পুজো হয় চারদিন ধরে। দুর্গামূর্তির পাশাপাশি চারদিনই পুজো হয় সারদা মায়েরও। আশ্রমের সন্ন্যাসীরা জানান, পুজো হয় বেলুড় মঠের অনুকরণে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে এই পুজো হয়। বিবেকানন্দ নিজে বেলুড় মঠে ১৮৯৯ সালে দুর্গাপুজো চালু করেছিলেন। সেই আদর্শ মেনেই তাঁরা শুরু হয় দুর্গাপুজো।
পুজোর প্রতিমা আসে কুমোরটুলি থেকে। তবে সারদা মায়ের স্থায়ী মূর্তি তৈরি হয়েছে স্থানীয় শিল্পীদের দিয়ে। কেন দেবী দুর্গার সঙ্গে সারদা মাকেও পুজো করা হয়? সন্ন্যাসীরা জানান, স্বামী বিবেকানন্দ বরাবর শিষ্যদের বলতেন, ‘‘তোমরা মা সারদাকে মায়ের মতো মনে করবে। তিনিই তোমাদের পরম পূজ্য।’’ বিবেকানন্দের সেই উপদেশকে মান্যতা দিতেই এই নিয়ম।