—ফাইল চিত্র
জোট-প্রক্রিয়াকে ঘিরে ফের সামনে এল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ জটিলতা। বামেদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এআইসিসি যে কমিটি গড়েছে, সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর কিছু জানা নেই বলে এ বার দাবি করলেন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের উপনেতা ও বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো। তাঁর এমন মন্তব্যে বিস্মিত ওই কমিটির অপর দুই সদস্য, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। গোটা ঘটনাপ্রবাহে বামেদের সঙ্গে জোটের প্রক্রিয়াতেই ধাক্কা লাগছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের মত।
বামেদের সঙ্গে আসন-রফা ও যৌথ আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনার জন্য চার সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছে এআইসিসি। বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদের ঘোষণা করা ওই কমিটিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, মান্নান ও প্রদীপবাবু ছাড়াও আছেন নেপালবাবু। কমিটি গঠনের পরে বৃহস্পতিবার বাম নেতৃত্বের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে গিয়েছিলেন মান্নান ও প্রদীপবাবু। প্রদেশ সভাপতি সে দিন ছিলেন মুর্শিদাবাদে, নেপালবাবু পুরুলিয়ায়। বৈঠকে তাঁর না থাকার যে খবর আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়েছিল, তা উদ্ধৃত করেই শনিবার টুইট করেছেন নেপালবাবু। সেখানেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘জোট সংক্রান্ত যে চার জনের কমিটি, সেখানে সরকারি ভাবে মাননীয় সভাপতি অধীর চৌধুরী আমাকে ডাকেননি বা কোনও নির্দেশও দেননি! সুতরাং, সেখানে উপস্থিত-অনুপস্থিতের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমার যত দূর ধারণা, যে সভা হয়েছিল, সেটা অধীর চৌধুরীর আহ্বানে কোনও সভা ছিল না।’’
বহরমপুরে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) সফর নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এই বিষয়ে অধীরবাবুর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তিনি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আসনের রূপরেখা তৈরি না হলেও বামেদের সঙ্গে আলোচনা মান্নান ও প্রদীপবাবুকে তিনি চালিয়ে যেতে বলেছেন। আর প্রদেশ সভাপতির ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, বামেদের সঙ্গে আলোচনা তো জোট-বৈঠক। প্রদেশ সভাপতির ‘আহ্বানে সভা’র প্রসঙ্গ সেখানে কী করে আসছে?
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ করোনা আক্রান্তের মৃত্যু, নতুন করে সংক্রমিত ৭৮৭
প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘কমিটির কথা জেনে আমরা সকলেই এআইসিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলেছি। কাউকেই ব্যক্তিগত ভাবে কিছু জানানো হয়নি। আর বামেদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই মান্নান ও আমার সঙ্গে নেপালের কথা হয়েছিল। তিনি আসতে পারছেন না, জানিয়েছিলেন। কিন্তু কমিটির কথা জানেন না, তখন তো বলেননি! আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানেন না, এমন কথা কী ভাবে বলছেন জানি না!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পরবর্তী বৈঠকে উনি থাকবেন, আশা করছি।’’
পুরুলিয়ায় তাঁরা কোন কোন আসনে লড়তে চান, বৈঠকের দিনই মান্নানকে হোয়াটস্অ্যাপে তার তালিকা পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন নেপালবাবু। মান্নানও বলছেন, ‘‘এত কথা হল। তার পরে এখন এমন মন্তব্য কেন, জানি না!’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেস যে সব আসনের দাবি আঁকড়ে থাকায় লোকসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছিল, পুরুলিয়া তার অন্যতম। শেষ পর্যন্ত নেপালবাবুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল কংগ্রেস। এখন বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর কথায় ফের ‘বেসুর’ বাজছে জোট-শিবিরে!
আরও পড়ুন: দুয়ারে সরকারে নাম নথিভুক্তি পৌঁছে গেল ২ কোটিতে, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর