প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য শূন্যপদের সংরক্ষণ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার কথা ঘোষণা করল রাজ্য। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পার্শ্বশিক্ষকদের সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, এত দিন মোট শূন্যপদের ১০ শতাংশ পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত থাকত। এ বার থেকে সেটাই হবে ৩০ শতাংশ। এ রাজ্যে পার্শ্বশিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার।
গত মার্চে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন পার্থবাবু জানিয়ে দিলেন, ওই বর্ধিত বেতন চালু হচ্ছে চলতি বছরের ১ মার্চ থেকেই। অর্থাৎ প্রাথমিকের পার্শ্বশিক্ষকরা মার্চ থেকেই ১০ হাজার এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১৩ হাজার টাকা হারে বেতন পাবেন। তা ছাড়া ২০২১-এর মধ্যে অথবা টাকাকড়ি থাকলে তার আগেও পার্শ্বশিক্ষকদের স্থায়িকরণের ব্যবস্থা হতে পারে। এই ঘোষণায় অবশ্য পুরোপুরি খুশি নন অনেকেই। পার্শ্বশিক্ষকদের এক দল পরে বলেন, ‘‘বেতন তো আগেই বেড়েছিল। এ বার সেটা মার্চ থেকে চালু হওয়ার কথা বলছে। কিন্তু এখনও সরকারি নির্দেশনামা এল না। স্থায়িকরণও করল না। শুধু আশ্বাস।’’
আশ্বাসের এখানেই শেষ নয়। পার্থবাবু জানান, পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং প্রশিক্ষণহীনদের জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হবে। সার্বিক ভাবে স্থায়ী শিক্ষক ও পার্শ্বশিক্ষকের ব্যবধান দূর করার চিন্তাও হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন সর্বত্রই টেট-এর মাধ্যমে আসতে হয়। সে ক্ষেত্রে আইন বাধা না হলে পার্শ্বশিক্ষকদের মধ্যে থেকেই পরীক্ষা নেওয়া হবে।’’ এই বক্তব্যের সারমর্ম নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। পরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস পার্শ্বশিক্ষক সমিতির সভাপতি রোমিউল ইসলাম শেখ বলেন, ‘‘মন্ত্রী বলতে চেয়েছেন পার্শ্বশিক্ষকদের সংরক্ষিত আসনে পার্শ্বশিক্ষকরাই পরীক্ষা দেবেন। যাঁরা প্রাথমিক স্কুলে পড়ান, তাঁরা প্রাথমিকের জন্য এবং যাঁরা উচ্চ প্রাথমিকে পড়ান, তাঁরা উচ্চ প্রাথমিক স্তরে পরীক্ষা দিতে পারবেন।’’
উত্তরবঙ্গে যাওয়ার কারণে সম্মেলনে থাকতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে তিনি সকলকে অভিনন্দন জানান। বলেন, ‘‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। বিশ্বাস রাখবেন, ভরসা রাখবেন। এখন এই মুহূর্তে হাতে টাকা নেই। দেনা যখন শোধ হয়ে যাবে বা যখনই সুযোগ হবে তখনই আপনাদের দিকটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’
ঢুকতে না পেরে স্টেডিয়ামের বাইরে এ দিন বিক্ষোভ দেখান এক দল পার্শ্বশিক্ষক। গ্যালারিতে ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। বক্তব্যের মাঝে থামতেও হয় মন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে মামলা করা নিয়ে বিরোধী পক্ষের আইনজীবীদের কটাক্ষ করে তিনি সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কেস করবেন না। কেস করে লাভ নেই।’’