বাগডোগরা যাওয়ার আগে সুকনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
পাহাড়ে ধস, সমতলে বন্যা। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কাটল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও উদ্বেগের সুর।
এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ি ছাড়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী সুকনা বন বাংলোতে বসেই পাহাড় এবং সমতলের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। উদ্ধারের কাজ, ধস সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার কাজে আরও গতি আনার নির্দেশ দেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলায় বন্যা দুর্গতদের জন্য তৈরি ১৭টি ত্রাণ শিবির আরও সাতদিন চলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে, তার মূল অনুসন্ধানের উদ্দেশেও কিছু ব্যবস্থার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সিকিম, ভুটান জল ছাড়লে উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। সে জন্য এই দুই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ সিকিমের বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকেও রাজ্যকে না জানিয়ে যেন জল না ছাড়া হয়, তার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে, বলেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানান, দার্জিলিং পাহাড়ের ভূতাত্ত্বিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সমীক্ষার প্রয়োজন। তিনি রাজ্যের মুখ্য সচিবের মাধ্যমে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করবেন, যাতে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে এ বিষয়ে একটি বিশদ রিপোর্ট দিতে পারে। পাহাড়ে যে সব নির্মাণ হচ্ছে, সেগুলি কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা-ও এই সমীক্ষায় থাকা দরকার, বলেন তিনি।
গত কাল রাতের পর পাঁচজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। টিংলিঙের ধস বিপর্যস্ত এলাকা থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। কালিম্পঙের ৮ মাইল এবং কোলাখামেও উদ্ধার চলছে। শিলিগুড়ি-লাগোয়া নেপাল সীমান্তের মেচি নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি দেহ। বৃষ্টি চলতে থাকায় নতুন করে ধসের খবরও মিলেছে। কালিম্পঙের রংপো এলাকা, এবং রম্বির কাছে ২৯ মাইলে ফের ধস নেমেছে। ফের ধসে ভেঙেছে সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগের ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও।
মঙ্গলবার রাতের পর থেকেই পাহাড়ে ছোট-মাঝারি ধস চলছেই। ধসে নিখোঁজের তালিকা ক্রমশ বাড়ছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও অন্তত ১০ জন নিঁখোজ রয়েছেন। এদের মধ্যে মিরিকের চার জন এবং কালিম্পঙের ৬ জন রয়েছেন। সরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ৩০। তবে দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, নেপাল থেকেও কিছু দেহ উদ্ধার হয়েছে।