সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি তৃণমূলের ১৯ নেতার। ফাইল ছবি।
তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সম্পত্তি বৃদ্ধিতে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি।
পুজোর আগে সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। সেই দলের ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)কে যুক্ত করার। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বর্ণকমল সাহা-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে পার্টি করার হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দিল। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সম্পত্তি মামলায় অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়েই স্পষ্ট, বিজেপির কুৎসার চক্রান্ত ব্যর্থ হল।’’ পাল্টা বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই মামলা দায়ের করার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। ঠিক সময় সমস্ত কিছুর উপর থেকে পর্দা উঠবে। সত্য প্রতারিত হতে পারে, কিন্তু পরাজিত হয় না।’’
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের ১৯ জন নেতার সম্পত্তি কী হারে বেড়েছে, তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। সম্প্রতি সেই মামলায় ইডিকেও পার্টি করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন স্বর্ণকমল সাহা-সহ কয়েক জন তৃণমূল নেতা। সেই মামলাতেই হাই কোর্টের রায়কে খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
হাই কোর্টে তৃণমূলের যে ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তি খতিয়ে দেখার আর্জি জানানো হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, শিউলি সাহার মতো মন্ত্রী বিধায়ক। পাশাপাশি, প্রাক্তন মন্ত্রী অমিত মিত্র, বর্তমান মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের নামও রয়েছে। রয়েছে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও।
তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে আইনজীবী শামিম আহমেদ দাবি করেছিলেন, গত ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এঁদের সম্পত্তি বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আর্জি জানান, পাঁচ বছরে এঁদের সম্পত্তি কী ভাবে এত বাড়ল, তা খতিয়ে দেখুক ইডি। এর প্রেক্ষিতে ইডিকে ওই মামলায় একটি পার্টি করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্টের প্রদান বিচারপতির বেঞ্চ।
অন্য দিকে, এই মামলার প্রেক্ষিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিমরা। তাঁদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট মামলায় শুধু তৃণমূল নয়, সিপিএম এবং বিজেপির বেশ কয়েক জন নেতারও নাম রয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেবল তৃণমূলের নেতাদের নামই প্রচার করছে বিরোধীরা।