বালির জলাভূমি বাঁচাও কমিটির নেতা তপন দত্তকে খুনের মামলায় নতুন করে বিচারেই সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
ওই খুনের ঘটনায় পাঁচ অভিযুক্ত হাওড়া জেলা আদালতে বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ার পরে কলকাতা হাইকোর্ট গত ১০ এপ্রিল জেলা আদালতের রায় খারিজ করে দেয়। নতুন করে বিচারের নির্দেশ দেয় বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি মহম্মদ মুমতাজ খানের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অন্যতম অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়েন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি নবীন সিংহের বেঞ্চ তাঁর আর্জি খারিজ করে দিয়ে জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল থাকবে।
প্রয়াত তপন দত্তের পরিবারের তরফে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েও হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। তপনবাবুর কন্যা প্রিয়াঙ্কার আইনজীবী কলিন গঞ্জালেস ও সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, নিহতের স্ত্রী প্রতিমাদেবী হাওড়ার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছিলেন। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্যই সিবিআই-এর হস্তক্ষেপও চাওয়া হয়েছিল। এখনও সেই মামলার শুনানি চলছে হাইকোর্টে। ষষ্ঠী গায়েনের তরফে আজ সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন দুঁদে আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। তিনি যুক্তি দেন, ওই খুনের সঙ্গে জলাভূমি বাঁচাও আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই। এই যুক্তিতে সিবিআই তদন্তেরও বিরোধিতা করেন তিনি। তপনবাবুর পরিবারের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চলছে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চেই। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সিবিআই তদন্ত হবে কি না, এ বিষয়ে হাইকোর্টই সিদ্ধান্ত নেবে।
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে, ২০১১-র ৬ মে রাতে তপন দত্ত খুন হন। খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে তাঁর স্ত্রী প্রতিমাদেবী ২০১২ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ রায়কে গ্রেফতারের দাবি তোলেন তিনি।
প্রতিমাদেবীর আইনজীবীদের অভিযোগ, সিআইডি প্রভাবশালী কয়েক জন অভিযুক্তকে আড়াল করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। এর পরে হাওড়া জেলা আদালত ২০১৪-র ৬ ডিসেম্বর সব অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু হাওড়া জেলা আদালত তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। সেই সূত্র ধরেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, নিম্ন আদালতকে এই মামলার পুনর্বিচার করতে হবে এবং তপনবাবুর স্ত্রী প্রতিমাদেবী তদন্তকারীদের যে সব তথ্যপ্রমাণ দিয়েছিলেন, তার ভিত্তিতে নিম্ন আদালতকে সাক্ষ্যগ্রহণও করতে হবে।