মমতার নতুন বার্তা। ছবি: ফেসবুক।
রাজ্যের কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে ভালবেসেই তিনি বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দিতেন বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সোমবার মমতা জানালেন, ডিএ ‘বাধ্যতামূলক’ নয়, ‘ঐচ্ছিক’। এমন কথা অতীতেও বলেছেন মমতা। তবে এ বার আরও কড়া ভাষায় মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ-র দাবিদারদের বললেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি খুঁজে নিন না, তা হলে আরও বেশি বেতন পাবেন, আরও বেশি ডিএ পাবেন। আমাদের রাজ্য সরকারের চাকরিতে যখন ঢুকেছেন, তখন এখানে যা নিয়মকানুন রয়েছে সেই মতো করছি।’’
সরকারি কর্মচারীদের একাংশ কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে সরব অনেক দিন ধরেই। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তারই মধ্যে মমতা এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারি এবং রাজ্য সরকারি চাকরির মধ্যে কোথায় ফারাক তা নিয়েও মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যিনি কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করেন তাঁর অর্থনৈতিক পলিসি আলাদা। সার্ভিস রুল আলাদা। যিনি রাজ্য সরকারের চাকরি করেন তাঁর সার্ভিস রুল আলাদা।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘যান না, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি খুঁজে নিন না, তা হলে আরও বেশি বেতন পাবেন, আরও বেশি ডিএ পাবেন।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে মমতা আরও একটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের কাজের পর্যালোচনা করে। পারফরম্যান্স ভাল না হলে চাকরি চলে যায়। উচ্চপদস্থদেরও। আমরা তো ও সব এখনও করি না।’’ সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘আমাকে দুর্বল মনে করার কারণ নেই। আমি দুর্বল মানুষ নই। আমি এখনও আপনাদের পুরো পক্ষে। আপনাদের অধিকার নয়, তবুও ১২৬ শতাংশ ডিএ দিয়েছে। ষষ্ঠ পে কমিশনের টাকাও দিয়ে দিয়েছি।’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘আমার যদি টাকা থাকে ভালবেসে পুরস্কার দিতাম। সিপিএম আমলে ৩৫ শতাংশ না কত দিয়েছিল। ওটাকে আমি ১২৬ শতাংশ করেছি।’’
সম্প্রতি রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কর্মবিরতি এবং ধর্মঘট পালন করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ নিয়ে চলছে মামলাও। বার বার শুনানি পিছিয়ে গেলেও আন্দোলন চলছে। সেই পরিস্থিতিতে গত মার্চ মাসে আলিপুর জেলা আদালতের একটি অনুষ্ঠানে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমরা তো আইনজীবীদের উপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কেড়ে নেওয়ার পক্ষে নই। আমি অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকার।’’
প্রসঙ্গত চলতি বছরের রাজ্য বাজেট পেশের দিনেই ৩ শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে সরকার। মার্চ মাসের বেতন থেকে তা দেওয়াও শুরু হয়েছে। রাজ্যের অর্থাভাবের কথা উল্লেখ করে মমতা অতীতে বলেছিলেন, ‘‘আমরা তো ম্যাজিশিয়ান নই। টাকাটাও জোগাড় করতে হবে। অনেকে বলে, এটা পেলাম, ওটা দাও, এটা পেলাম, ওটা দাও। আরে যেটা পেলে সেটাকে ধরে রাখতে গেলে যে টাকার প্রয়োজন সেটা কোথা থেকে জোগাড় হবে? কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে আর মিথ্যা কথা বলছে।’’ সোমবারও মমতা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের প্রাপ্য টাকা মেটাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন।