বুধবার চেন্নাইয়ের গ্রেট লেকস ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের সমাবর্তনে রতন টাটা। ছবি :পিটিআই।
‘বাংলার বাঘিনি’ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন— সিঙ্গুরের দিনগুলির দিকে ফিরে তাকিয়ে এমনই উপলব্ধি রতন টাটার।
বুধবার চেন্নাইয়ের গ্রেট লেকস ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের সমাবর্তনে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান-এমেরিটাস বলেন, ‘‘এক জন আক্রমণাত্মক নেতা যখন এর সঙ্গে জড়িত, তখন আরও সাবধানে পরিস্থিতি বিচার করার শিক্ষা আমরা পেয়েছি। অনেকে বাংলার বাঘের কথা বলেন, কিন্তু (আসলে) বাঘিনি।’’
নিজের ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ভাবমূর্তি বোঝাতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু বার বলেছেন, তিনি ‘বাঘের বাচ্চা’। টাটা কারও নাম না করলেও তিনি ‘বাঘিনি’ বলতে তৎকালীন বিরোধী নেত্রীকেই বুঝিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বস্তুত, ন্যানো গাড়ির বিপণন কৌশলে যে ভুল হয়েছিল, তা মেনে নিয়েও ব্যবসায়িক বিপর্যয়ের জন্য টাটা কিছুটা হলেও দুষেছেন তৎকালীন সিঙ্গুর পরিস্থিতিকে। যার জন্যই টাটা মোটরস-কে বিপণন কৌশলের থেকেও জোর দিতে হয়েছিল দ্রুত নতুন ঠিকানা খোঁজার দিকে। সেই ডামাডোলে ন্যানো নিয়ে মানুষের উৎসাহে যেমন কিছুটা ভাটা পড়েছিল, তেমন প্রতিযোগীরাও বাজারে অনেক ‘গল্প’ তৈরির সুযোগ পেয়েছিল বলে মনে করেন তিনি।
সাত বছর আগে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও শিল্পমন্ত্রী নিরপম সেনের আশ্বাসে ভরসা রাখতে না পেরে সিঙ্গুর থেকে কারখানা গোটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রতন টাটা। বলেছিলেন, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকালেও ভয় পান না। কিন্তু মমতা ‘ট্রিগার টিপে দিয়েছিলেন’। এর পর সানন্দে নতুন ঠাঁই পেয়ে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘গুড এম’ এবং মমতাকে ‘ব্যাড এম’ বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি।
তবে এ দিন টাটা মেনে নিয়েছেন, ন্যানো-র প্রচার কৌশলে ‘একগুচ্ছ’ ভুল ছিল। তাঁর মতে, ন্যানো-কে ‘সস্তা’র বদলে ‘সাধ্যের মধ্যে থাকা’ গাড়ি হিসেবে তুলে ধরা উচিত ছিল। সস্তার গাড়ি হিসেবে পরিচিতির জন্য বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। টাটার মতে, ‘‘মানুষ সস্তার গাড়িতে নিজেদের দেখতে চায়নি। আর সেটাই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল।’’