বক্তা: কার্শিয়াঙে ভিড় জমেছে অনীত থাপার সভায়। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মঙ্গলবার দুপুরে কার্শিয়াঙে তিনি মিছিল করবেন, আগেই ঘোষণা হয়েছিল। লোকজনও জড়ো হয়ে যায় সেই মতো। কিন্তু মিছিলে জনসমাগমের থেকেও অবাক করে দেয় বন্ধ দোকানের সামনে টুকরো টুকরো ভিড়। ততক্ষণে পাহাড়ি শহরে চাউর হয়ে গিয়েছে, মিছিল করে এ দিন দোকান খুলিয়ে দেবেন অনীত থাপা। যদিও বিনয় তামাঙ্গপন্থী এই নেতা বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সঙ্গে বসে আগে আলোচনা করবেন তিনি। তাঁরা যা চাইবেন, সেটাই হবে।
মিরিকে অবশ্য এ দিন পথে নেমে দোকান খোলানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন পুর-চেয়ারম্যান এল বি রাই। বিমল গুরুঙ্গপন্থীরা সেখানে এ দিনও মিছিল করে। কিন্তু তৃণমূল সেই মিছিলের পথ রুখে দিয়ে দোকানপাট খোলায় সহায়তা করে। প্রশাসন সূত্রে দাবি, ৭০-৮০ শতাংশ দোকান খুলে গিয়েছে মিরিকে। দার্জিলিঙের লালকুঠিতে জিটিএ দফতরেও এ দিন কয়েক জন কর্মী কাজে আসেন।
আরও পড়ুন: বাইকে চেপেই ট্রেন ধরতে আসবেন কি
এগুলিকে ইতিবাচক ইঙ্গিত বলেই মনে করছে প্রশাসন। তাদের আরও উৎসাহ দিয়েছে অনীতের এ দিনের মিছিলে লোকসমাগম। একই সময়ে মহিলা মোর্চারও একটি মিছিল আসছিল সেই পথে। মুহূর্তে দুই মিছিল কাছাকাছি। সতর্ক হয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরাও। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, গোড়ায় মহিলা মোর্চার মিছিল থেকে ‘বিমল গুরুঙ্গ জিন্দাবাদ’ স্লোগান উঠলেও অচিরেই সেই মিছিল অনীতের সঙ্গী হয়ে যায়। তখন স্লোগান ওঠে, ‘অনীত-বিমল ভাই ভাই’, ‘বিনয় তামাঙ্গ জিন্দাবাদ’।
তা হলে কি জোর করে বন্ধ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর এই মোর্চা সমর্থকেরা? অনীত কিন্তু বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ গোর্খাল্যান্ড চান। বোমা-বন্ধ চান না। এত দিন বন্ধ করে কোনও লাভ হয়নি। এখন আলোচনায় রাজি হয়েছে রাজ্য। সে জন্যই আমরা মোর্চার তরফে ১২ সেপ্টেম্বরের আলোচনাতেও যাব।’’ তাঁর এই কথা শুনে কিন্তু ভিড় থেকে সদর্থক স্লোগানই শোনা গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, গুরুঙ্গ এখন লুকিয়ে রয়েছেন। যত তিনি লুকিয়ে থাকবেন, তাঁর জনপ্রিয়তা কমবে। এর পাশাপাশি পাহাড়ের জীবনকে স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ করা হবে। সোমবার মিরিকে তৃণমূলের মিছিল, মঙ্গলবার কার্শিয়াঙে অনীতের মিছিলের পরে বুধবার দার্জিলিঙে বিনয় তামাঙ্গের মোমবাতি মিছিল করার কথা। এরই মধ্যে ১২ তারিখ উত্তরকন্যায় বৈঠকের আগে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাকে শিলিগুড়ি পাঠানো হয়েছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেও।