আগামী ২৪ ঘণ্টা চলবে লাগাতার বৃষ্টি, পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মুখে রাজ্যবাসীর কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়ে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিল, আগামী ২৪ ঘণ্টা একনাগাড়ে বৃষ্টি চলবে। কলকাতার পাশাপাশি শুক্রবার অবধি ভারী থেকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। শনিবার, মহালয়ার দিন থেকে আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা আছে। তবে পুজোর মধ্যে বৃষ্টি হবে কিনা, এখনই স্পষ্ট করে বলতে পারেনি আবহাওয়া দফতর।
হাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এটা বর্ষার বৃষ্টি। রাজ্যের উপর মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় হওয়ার কারণেই পুজোর মুখে এই বৃষ্টিপাত। এ ছাড়া অসম ও নাগাল্যান্ডের কাছে একটি এবং অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর কাছে বঙ্গোপসাগরের উপর আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় হওয়ায় আশ্বিনেও জারি বৃষ্টিপাত। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিক। সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা হবে ৯৭ শতাংশ। সর্বনিম্ন ৭৯ শতাংশ। গত চব্বিশ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ০৬৭.১ মিলিমিটার।
কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। দুপুর থেকে রাত অবধি চলেছে হাল্কা থেকে ভারী বিরামহীন বৃষ্টি। স্কুলপড়ুয়া, অফিসযাত্রী থেকে পুজোর বাজারমুখী জনতা, বিপাকে পড়েন সবাই। বৃষ্টির ফলে জল জমে যায় বেহালা, ঠাকুরপুকুর, শখের বাজার, তারাতলা, মোমিনপুর, শীলপাড়া এবং হরিদেবপুরের বেশ কিছু এলাকায়। জমা জল যাতে দ্রুত নেমে যায় তার জন্য প্রথম থেকেই তৎপর কলকাতা পুরসভা। বৃষ্টি এবং সাময়িক জল জমার কারণে সোমবারের পরে মঙ্গলবার সকালেও কলকাতার রাজপথে যানবাহনের গতি ধীর। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বাইপাস ডায়মন্ডহারবার রোড, হাইড রোডে যানজটে নাকাল হওয়ার ছবি ধরা পড়ে।
মৌসুমী অক্ষরেখার বর্তমান অবস্থান
পুজোর ঢাকে কার্যত কাঠি পড়ে গিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষেই মহালয়া। কলকাতায় মহালয়ার দু’দিন পর থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে পুজোর উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে ক্রেতা-বিক্রেতা, সকলের কপালেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বৃষ্টি। উদ্যোক্তাদের অনেকেই বলছেন, মণ্ডপ তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সময়ে বৃষ্টিতে মণ্ডপের ক্ষতি হলে সামলানো কঠিন। অন্য দিকে, কুমোরটুলিতে প্রতিমায় পড়ছে রঙের পোঁচ। ভেজা আবহাওয়া থাকলে আখেরে কাজের ক্ষতি। উত্তরের একটি ছোট পুজোর কর্তার আকুল প্রার্থনা, ‘‘এখন বৃষ্টি হয়ে যাক। কিন্তু মহালয়ার পরে যেন না হয়।’’ আচমকা বৃষ্টিতে হতাশ ছোট দোকানিদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, এ সময়ে স্বল্পবিত্তের ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসা শুরু করেন। বৃষ্টিতে সেই বাজার মার খাবে।
মহালয়ার আগে আম বাঙালির প্রার্থনা, দেবীপক্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে কেটে যাক উদ্বেগের মেঘ।
আরও পড়ুন: মহালয়ার আগেই বৃষ্টি, মার খাচ্ছে পুজো-প্রস্তুতি
আরও পড়ুন: মিছিল আর বৃষ্টি, যানজট শহরে