রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে রেলের একাধিক প্রকল্প আটকে থাকার পিছনে রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করে সরব হলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক কারণেই পশ্চিমবঙ্গে রেল প্রকল্পের কাজ আটকে রাখা হয়।’’
আজ বছরের প্রথম দিনে রেল ভবন থেকে বালুরঘাট-শিয়ালদহ এক্সপ্রেসের সূচনা করেন বৈষ্ণব। বালুরঘাট স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ১৪টি কামরা বিশিষ্ট ওই ট্রেনের উদ্বোধন ছাড়াও বালুরঘাট স্টেশনটি বিশ্বমানের স্টেশন হবে বলে দাবি করেছেন বৈষ্ণব। তিনি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ৯৮টি স্টেশন বিশ্বমানের স্টেশন হতে চলেছে। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গ পেতে চলেছে ২৬টি স্টেশন।’’
পশ্চিমবঙ্গে প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ বড় একটি সমস্যা বলে দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী। বর্তমানে রাজ্যে রেলের প্রায় ৫০,৯১৫ কোটি টাকা মূল্যের ৬১টি প্রকল্প চালু রয়েছে। রেল মন্ত্রকের দাবি, যার মধ্যে নতুন লাইন, ডাবলিং বা বৈদ্যুতিকরণ ক্ষেত্রে ১৪০৮ কিলোমিটার লাইন পাতার কাজ জমির অভাবে আটকে রয়েছে। যার প্রকল্প মূল্য প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি বলে দাবি করেন বৈষ্ণব। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাকি অধিগ্রহণের কাজ রাজ্য সরকারের সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ জমি অধিগ্রহণ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সাহায্য না পাওয়ায় কাজ আটকে রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘জমি অধিগ্রহণ ছাড়াও রেল প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন সরকারি অনুমতি (পানীয় জল, বিদ্যুৎ, বন দফতরের অনুমতি) পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের গড়িমসির কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে।’’
এর পিছনে রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন বৈষ্ণব। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারকে একের পর এক চিঠি লেখা সত্ত্বেও রাজ্যের পক্ষ থেকে কোনও জবাব আসেনি। রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ যে ভাবে আটকে রাখা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, তা দেখে মনে হচ্ছে রাজনৈতিক কারণেই ওই বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ, অন্য রাজ্যগুলিতে ওই কাজ মসৃণ ভাবে চলছে।’’ বৈষ্ণবের দাবি, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতামূলক মনোভাবের খেসারত দিতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকেই। রেল প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে প্রচারে নামার বিষয়েও ভাবছেন বিজেপি নেতৃত্ব।