(বাঁ দিক থেকে) রাহুল গান্ধী, নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
১০০ দিনের কাজে ‘বকেয়া’ টাকা চেয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন রাহুল গান্ধী। শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে রাহুল জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দ্রুত সমস্ত বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ। চিঠির শেষে রাহুল এ-ও জানিয়েছেন যে, রাজনীতিকদের উচিত রাজনৈতিক মতফারাকের ঊর্ধ্বে উঠে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারকে গুরুত্ব দেওয়া।
রাহুল ‘ন্যায়বিচার’কে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বললেও রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছেন, এর মধ্যে সূক্ষ রাজনৈতিক অঙ্কও রয়েছে। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় ঐক্যের ছবিটি আর স্পষ্ট নয়। জোটের অন্যতম শরিক তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভা বাংলায় একাই লড়বে তাঁর দল। তবে গত কয়েক দিনে বরাবরই তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া সংক্রান্ত প্রশ্নের নমনীয় উত্তর দিতে দেখা গিয়েছে রাহুল-সহ কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে। কিছু দিন আগেই রাহুল জানিয়েছিলেন, মমতা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’তেই রয়েছেন। এই আবহে তৃণমূলের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে মোদীকে চিঠি লিখতে আদতে রাহুল মমতাকেই বার্তা দিতে চাইলেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
মোদীকে লেখা রাহুলের চিঠি। ছবি: সংগৃহীত।
১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা মেটানোর দাবি-সহ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবাদ-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। এ বার তৃণমূলের সেই দাবিই শোনা গেল কংগ্রেসের রাহুলের গলায়। রাহুল এই প্রসঙ্গে বাংলায় তাঁর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র একটি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি জানান, ‘ন্যায় যাত্রা’য় পশ্চিমবঙ্গ খেতমজদুর সমিতি নামের একটি সংগঠন তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে অভাব-অসুবিধার কথা জানায়।
রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাহুল লেখেন, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যের ৭৫ লক্ষ পরিবার ১০০ দিনের কাজ পেত। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা-ই কমে ৮০০০ পরিবারে এসে ঠেকেছে বলে জানান রাহুল। এর ফলে মহিলা এবং তফসিলি জাতি, জনজাতি মানুষেরা সবচেয়ে অসুবিধার মধ্যে পড়ছে বলে জানান তিনি। ১৮ বছর আগে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প চালু করে সকলের কাজের অধিকার সুনিশ্চিত করেছিল বলে চিঠিতে দাবি করেন রাহুল। শেষে কেন্দ্রীয় সরকারকে এই প্রকল্পের ‘বকেয়া’ অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।