পরীক্ষা এক, তালিকা তিন! যার জেরে স্বচ্ছতার প্রশ্নে ফের কাঠগড়ায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)।
২০১৭ সালের ডব্লিউবিসিএস গ্রুপ এ এবং বি-র মেইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা পার্সোনালিটি টেস্ট-এ ডাক পেয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশিত হয় গত মঙ্গলবার। পিএসসি সূত্রের খবর, প্রথম তালিকায় ৭৩৯ জনের নাম এবং রোল নম্বর ছিল। তাঁদের কাকে কবে কোন সময়ে পার্সোনালিটি টেস্ট-এ হাজির হতে হবে, দেওয়া ছিল তারও তালিকা। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই ওই তালিকা তুলে নিয়ে নতুন একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে বাদ চলে যান প্রথম তালিকার ১৫ জন। ৭২৪ জনের নাম বাদ দিয়ে শুধু রোল নম্বরের তালিকা প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় বার। যেখানে পার্সোনালিটি টেস্ট-এর নির্ঘণ্ট দেওয়া ছিল না। বলা ছিল, পার্সোনালিটি টেস্ট শুরু হবে ২৮ জুন। তার নির্ঘণ্ট দ্রুত ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর পরে আরও এক বার ওই তালিকা প্রকাশিত হয়, যেখানে ৭২৪ জনের নাম, রোল নম্বর এবং পার্সোনালিটি টেস্টের নির্ঘণ্ট দেওয়া আছে।
এই কাণ্ডের পর প্রশ্ন উঠেছে, ডব্লিউবিসিএস গ্রুপ এ এবং বি-র মেইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকায় এত বার বদল হল কেন? পিএসসি সূত্রের খবর, প্রথম বার ৭৩৯ জনের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে এমন ১৫ জনের নাম ছিল, যাঁরা প্রিলিমিনারি টেস্ট-এই উত্তীর্ণ হননি বা ২০১৭ সালে আবেদনই করেননি। প্রথম তালিকায় যাঁদের ২৮ অগস্ট পার্সোনালিটি টেস্ট-এ উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল, তাঁদের সিংহভাগ ওই ১৫ জনের মধ্যে। এই ভুল সংশোধন করে পরে ৭২৪ জনের রোল নম্বর এবং তারও পরে তাঁদের নাম-সহ রোল নম্বর এবং পার্সোনালিটি টেস্ট-এর নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হয়।
পিএসসি সূত্রের আরও খবর, ওই ১৫ জনের এক প্রার্থীর বাবা সংশ্লিষ্ট দফতরে ফোন করে জানান, তাঁর মেয়ে ২০১৭ সালের পরীক্ষায় আবেদনই করেননি। কারণ, তিনি ইতিমধ্যেই বিসিএস অফিসার হিসাবে কর্মরত। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ওই তালিকায় তিন বারই ঠাঁই পেয়েছেন প্রশান্ত বর্মন (রোল নম্বর ১৭০০৩৫৩) নামে এক প্রার্থী, যাঁর ইংরেজির নম্বর ‘০’ থেকে বেড়ে ‘১৬২’ এবং বাংলার নম্বর ‘১৮’ থেকে বেড়ে ‘১৬৮’ হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমন প্রার্থীর নাম মেধা তালিকায় থাকায় অনেকেই অবাক। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে।
বিসিএস গ্রুপ এ এবং বি-র মেইন পরীক্ষার মেধা তালিকা ঘিরে বিতর্ক নিয়ে পিএসসি কর্তৃপক্ষের সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। ফোনে প্রশ্ন করা হলে পিএসসি-র চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মিটিংয়ে আছি। কথা বলতে পারব না।’’