প্রতীকী ছবি।
দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘কাটমানি’ নিয়ে প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে তৈরি হল বিতর্ক।
হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের আকনা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিকের টেস্ট চলছে। সোমবার ছিল বাংলা পরীক্ষা। প্রশ্নপত্রে ছিল সংবাদপত্রের জন্য প্রতিবেদন তৈরি সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের বিষয় নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
প্রশ্নপত্রে দু’টি বিষয় দিয়ে তার মধ্যে থেকে একটি বেছে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রথম বিষয়টি ছিল, ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি সমাজ জীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, এ প্রসঙ্গে সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।’ দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল, ‘দুর্নীতিদমনে কাটমানি বন্ধ ও ফেরৎ—পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ—এ বিষয়ে সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।’ ১৫০ শব্দের মধ্যে এই প্রতিবেদন রচনা করতে বলা হয়েছে। এর জন্য রাখা হয়েছে ৫ নম্বর।
প্রশ্নপত্রের সেই অংশ
এ দিন পরীক্ষা শুরু হয় বেলা ২টোয়। চলে ৩টে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। স্কুলের প্রধানশিক্ষক রোহিতকুমার পাইন জানান, বাংলার শিক্ষক শুভাশিস ঘোষ এই প্রশ্নপত্রটি তৈরি করেছেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে বিষয়টি প্রধানশিক্ষকের নজরে আনা হয়। তিনি অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই প্রশ্ন দু’টি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘আমি এ নিয়ে কিছু বলব না। যা বলার প্রধানশিক্ষক বলবেন।’’ প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের বলেছি, ওই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে না। ওই প্রশ্নের জন্য আমরা গড় নম্বর দিয়ে দেব।’’ তবে প্রধানশিক্ষকের এই ঘোষণার আগেই অনেকের উত্তর লেখা হয়ে গিয়েছিল। এই প্রশ্ন করার জন্য ওই শিক্ষক ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান প্রধানশিক্ষক।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি অজিত হালদার বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।’’ তৃণমূল পরিচালিত আকনা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘পরীক্ষায় রাজনৈতিক প্রশ্ন করা অন্যায় হয়েছে। এতে পড়ুয়াদের মনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে। কেন এমন প্রশ্ন তৈরি করা হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কী ঘটনা ঘটেছে তা খোঁজ নেব।’’ বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি সুবীর নাগ বলেন, ‘‘রাজ্যের শিক্ষকদের একাংশ সুপরিকল্পিতভাবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’