সভাধিপতির পরে মন্ত্রীকে শো-কজ

দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে এ বার তৃণমূলের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে শো-কজ করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। তাঁর বিধানসভা এলাকা বলরামপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একটি দেওয়াল লেখা নিয়ে কংগ্রেস কিছু দিন আগে অভিযোগ জানিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে দলের জেলা সভাপতি হিসেবে শান্তিরামবাবুকে শো-কজ করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩০
Share:

বলরামপুরে এই দেওয়াল লেখা ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে এ বার তৃণমূলের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে শো-কজ করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। তাঁর বিধানসভা এলাকা বলরামপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একটি দেওয়াল লেখা নিয়ে কংগ্রেস কিছু দিন আগে অভিযোগ জানিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে দলের জেলা সভাপতি হিসেবে শান্তিরামবাবুকে শো-কজ করা হয়।

Advertisement

জঙ্গলমহলে দু’টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া অব্যাহত রাখতে তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দিন তৃণমূলের এই দেওয়াল লেখা আদর্শ নিবার্চনী আচরণ বিধির পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থী নেপাল মাহাতো। তাঁর কথায়, “এ ভাবে একটি সরকারি প্রকল্পের উল্লেখ করে ভোট চাওয়ার অর্থ ভোটারদের প্রভাবিত করা। সেই বিষয়টি উল্লেখ করেই আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছিলাম।” কংগ্রেসের অভিযোগ, বলরামপুর ব্লকের একাধিক গ্রামের দেওয়ালে ওই কথা লিখেছে তৃণমূল। বলরামপুরের কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ দাস বলেন, “স্থানীয় কুড়নি, দঁড়দা, নেকড়ে, সিরগি, কানহা, দেউলি, শালবনি, হ্যেতাডি, সুপুরডি ইত্যাদি গ্রামে ওই দেওয়াল লিখে তৃণমূল ভোটারদের প্রভাবিত করছে।” তৃণমূলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, “শো-কজের জবাব পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কংগ্রেস যে ওই দেওয়াল লিখে আমাদের বিরুদ্ধে ক্যুৎসা রটাচ্ছে না তার প্রমাণ কী? প্রশাসনকে জানিয়েছি, ওই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”

২০০৯ সাল থেকে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী মানুষজন দু’টাকা কেজি দরে চাল পেতেন। ২০১১ সালে বর্তমান রাজ্য সরকার জঙ্গলমহলের মাওবাদী প্রভাবিত ব্লকগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত (যাঁদের বার্ষিক আয় বছরে ন্যূনতম ৩৬ হাজার টাকা) ও সাধারণ দরিদ্র মানুষকে (যাঁদের আয় বছরে ন্যূনতম ৪২ হাজার টাকা) এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “একটি দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে শো-কজ করা হয়েছে। ওই দেওয়াল লিখনগুলি মুছে ফেলার জন্যও তৃণমূল নেতৃত্বকে বলা হয়েছে।” এ ছাড়া এই মর্মে প্রশাসনের আরও কিছু করণীয় আছে কি না তা রাজ্য নিবার্চন কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের শো-কজের চিঠি তৃণমূলের জেলা দফতরে পৌঁছেছে বৃহস্পতিবার। দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো শো-কজের চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, “এই প্রকল্প তো রাজ্য সরকারেরই প্রকল্প। আমরা যা করেছি তা বলার মধ্যে আদর্শ আচরণ বিধি কী ভাবে লঙ্ঘন করা হয়? আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে কমিশনের (প্রশাসনের) কাছে চিঠি পাঠাচ্ছি যে কোন কোন কাজ করা যাবে না বা কী কী করলে আদর্শ নিবার্চনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা হয় তা আমাদের জানানো হোক।”

বাঁকুড়া কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়াকে কটূক্তির জন্য ইতিপূর্বে জেলা তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষনেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো ও পরে দলের যুব সভাপতি গৌতম রায়কে শো-কজ করেছে প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement