পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বাঘমুণ্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ-র। রবিবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ পুরুলিয়া-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বলরামপুর থানা এলাকার নামশোল গ্রামের অদূরে হনুমাতা সেতুর কাছে রাস্তার পাশে ঢালু জমিতে একটি গাড়িকে দোমাড়ানো মোচড়ানো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। সেই গাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়েছিল লম্বোদর ওরাং-এর (৪০) দেহ। বলরামপুর থানার হাঁসপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক ধরে লম্বোদরবাবু বাঘমুণ্ডিতেই মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি তিনি এই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ-র দায়িত্ব পান। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের ক্ষতি হয়ে গেল।” দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে উপস্থিত হন অনেক চিকিৎসক। ছিলেন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চক্ষু চিকিৎসক তথা পুরুলিয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতোও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পুরুলিয়া শহর ছুঁয়ে ওই চিকিৎসক একটি গাড়িতে করে বাঘমুণ্ডি ফিরছিলেন। নিজেই তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আর কেউ ওই গাড়িতে ছিল না। বলরামপুরে ঢোকার আগে ওই সেতুর কাছে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এলাকার লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে রাস্তা থেকে গড়িয়ে নীচে নদীর কাছে পড়ে রয়েছে তাঁর গাড়ি। গাড়িটি একটি গাছে আটকে থাকলেও গাড়ির ভিতর থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছিল ওই চিকিৎসকের দেহ।
এ দিকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণপদ সর্দার। তিনি বলেন, “লম্বোদরবাবু রাঁচিতে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা। রাস্তায় এখানে সামান্য বাঁক রয়েছে। তবু কী ভাবে গাড়িটা নীচের দিকে গড়িয়ে পড়ল বুঝতে পারছি না।” পুলিশ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কাউকে পায়নি। তবে বাসিন্দাদের অনেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন, রাস্তার উপরে একটি গরু চলে এসেছিল। গরুটিকে বাঁচাতে গিয়েই ডানদিকে বাঁক নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নীচে পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন চিকিৎসকর।
এ দিনই বেলা ১১টা নাগাদ হুড়া থানা এলাকার পাতলই সেতুর কাছে ধান বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মোটরবাইকে থাকা দুই যুবকের মৃত্যু হয়। আহত হন একজন। মৃতেরা হলেন হুড়ার খারপোড়া গ্রামের অমিতচরণ মুদি (২৬) ও সমীর মুদি (২২)। আহত যুবক জিতেন মুদিকে অচৈতন্য অবস্থায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মোটরবাইকে ওই যুবকরা পুরুলিয়া থেকে হুড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলেই ওই দু’জনের মৃত্যু হয়। ট্রাকটি পুলিশ আটক করেছে।
এ দিকে, শনিবার গভীর রাতে বীরভূমের নলহাটি শহরে দশ চাকা লরির সঙ্গে মোটরবাইকের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম মহম্মদ নবি (৪২)। বাড়ি নলহাটি পুরসভার করিমপুর এলাকায়। মোটরবাইকে আগুন ধরে গিয়েছিল।