সিপিএমের সদস্যদের ভাঙিয়ে ব্লকে সিপিএমের হাতে থাকা একমাত্র পঞ্চায়েতেরও দখল নিল তৃণমূল। সোমবার আস্থা প্রমাণের সভায় অপসারিত হলেন রঘুনাথপুর ১ ব্লকের খাজুরা পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান নন্দলাল সহিস।
এই ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে খাজুরাই ছিল সিপিএমের দখলে। বিডিও (রঘুনাথপুর ১) সুনীতিকুমার গুছাইত বলেন, “১৫ দিন আগে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন ওই পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা। তলবি সভায় উপস্থিত সদস্যেরা সকলেই অনাস্থার পক্ষে সমর্থন জানানোয় প্রধান অপসারিত হয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ দিনের মধ্যে ওই পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে খাজুরা পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে সিপিএম জিতেছিল ৯টি আসনে। তৃণমূলের দখলে গিয়েছিল তিনটি আসন। পরে খাজুরার সিপিএমের ৯ সদস্যের মধ্যে উপপ্রধান সহ চারজনকে নিজেদের দিকে এনেছিল তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের কিছু আগে নিতুড়িয়ায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে সিপিএমের দলত্যাগী চার সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করেছিল তৃণমূল।
কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের এক বছরের আগে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না বলে খাজুরাতে অনাস্থা আনা সম্ভব হয়নি। সময়সীমা পার হওয়ার পরেই পঞ্চায়েতের ৭ সদস্য অনাস্থা এনেছিলেন সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে। তবে সোমবার অনাস্থার সভাতে অনুপস্থিত ছিলেন প্রধান নন্দলালবাবু-সহ সিপিএমের পাঁচ সদস্য। তৃণমূলের তিন ও সিপিএমের দলত্যাগী চার মোট ৭ সদস্য উপস্থিত হয়ে কোরাম গঠন করেছেন। তবে সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ রাজ্যর সর্বত্রই বিরোধীদের হাতে থাকা পঞ্চায়েতগুলিতে ভয়, প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক ভাবে ক্ষমতা দখলের খেলা শুরু করেছে তৃণমূল। খাজুরাতেও একই কায়দায় ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। তবে তৃণমূলের নেতা প্রদীপ মাজি বলেন “এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সিপিএমের সদস্যরাই আমাদের দলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। তাই ওঁদের দলে নিয়েছিলাম। পঞ্চায়েতে সিপিএম সংখ্যালঘু হওয়ায় ওই পঞ্চায়েতটি আমাদের দখলে এসেছে।”
অন্য দিকে, রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতে সিপিএমের উপপ্রধানকে অপসারণ করে তৃণমূলের নতুন উপপ্রধান নির্বাচিত করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার নতুনডি পঞ্চায়েতে নতুন উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন কানাইচন্দ্র মাজি। প্রসঙ্গত এই পঞ্চায়েতটিও সিপিএমের দখলে ছিল। কিন্তু সিপিএমের সদস্যদের ভাঙিয়ে এই পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নতুনডিতে সিপিএম পেয়েছিল সাতটি আসন। তৃণমূলের দখলে ছিল তিনটি। সম্প্রতি সিপিএমের প্রধান গোলাম মোস্তাফা-সহ সিপিএমেরই পাঁচ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এর ফলে পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে চলে যায়। নতুন উপপ্রধান হিসাবে নির্বাচিত কানাইবাবুও সিপিএমের প্রতীকেই পঞ্চায়েত ভোটে জিতেছিলেন। অপসারিত হয়েছেন সিপিএমের উপপ্রধান ভীম মাল।