অনাস্থা সংক্রান্ত সভায় আগেই অপসারিত হয়েছিলেন তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর প্রধান। এ বার সিপিএমের সমর্থনে পঞ্চায়েতের দখল পেল বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়ো পঞ্চায়েতের ঘটনা। শুক্রবার ওই পঞ্চায়েতে সিপিএমের ৪ এবং তৃণমূলের ৩ সদস্যের সমর্থনে প্রধান হলেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর দুর্গা চক্রবর্তী। পুরো ঘটনাকে দলবিরোধী আখ্যা দিয়ে ওই পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি। তবে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর একাংশের অভিযোগ, বেড়ো পঞ্চায়েতে আগের প্রধানের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও দলগত ভাবে সেই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে। নতুন প্রধান দুর্গাদেবী দাবি করছেন, “আমরা কোনও ভাবেই দলবিরোধী কাজ করিনি। আগের প্রধানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে অনাস্থায় সায় দিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। এ দিন তারাই আমাকে প্রধান হিসাবে নির্বাচন করেছেন।” রঘুনাথপুর ১ বিডিও সুনীতিকুমার গুছাইত বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনে বেড়োয় নতুন প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।”
রঘুনাথপুর ১ ব্লকে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে তৃণমূল পরিচালিত তিনটি পঞ্চায়েতে ক্রমান্বয়ে অনাস্থা এনেছিলেন দলেরই সদস্যদের একাংশ। তার মধ্যে আড়রা ও চোরপাহাড়িতে অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকে কোরাম না হওয়ায় ক্ষমতাসীন প্রধানদের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু অপসারিত হন একমাত্র বেড়োর প্রধান। শুক্রবার ছিল নতুন প্রধান নির্বাচনের দিন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেড়োর মোট ১১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৭টি আসন। সিপিএমের দখলে গিয়েছিল ৪টি। কিন্তু আগের তৃণমূলের উপপ্রধান শ্রীকান্ত মাহাতোর মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে এই পঞ্চায়েতের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০টিতে। আগে তৃণমূলের ২ ও সিপিএমের ৪ অর্থাৎ মোট ৬ জন তৃণমূলের প্রধান চম্পা বাউরির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।
এ দিন অবশ্য প্রধান নির্বাচনে ব্লকের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী ভোটাভুটিতে যোগ দেয়নি। সিপিএমের এক সদস্য প্রধান হিসাবে দুর্গাদেবীর নাম প্রস্তাব করেন। প্রসঙ্গত আগে এই পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর হাতে প্রশাসনিক কর্তারা ঘেরাও হওয়ার ঘটনার জেরে পঞ্চায়েত কার্যালয় লাগোয়া এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন।