পুজোর মুখে বকেয়া মজুরি চেয়ে পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করলেন ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার ছাতনার শালডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। আন্দোলন ওঠে পঞ্চায়েত আধিকারিকদের আশ্বাসে।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, একশো দিনের প্রকল্পের কয়েক হাজার শ্রমিকের প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে এই পঞ্চায়েত এলাকায়। পুজোর আগে বকেয়া মজুরি চেয়ে সরব হচ্ছেন শ্রমিকেরা। এ দিন পঞ্চায়েতের দরজা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান অন্তত ৩০০ শ্রমিক। বেলা ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। প্রথমে তাঁরা পঞ্চায়েতে তালা দিতে যান। কিন্তু প্রধান ও পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা তাঁদের বুঝিয়ে আন্দোলন তোলেন। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্র থেকে একশো দিন প্রকল্পের টাকা না আসায় রাজ্য জুড়েই এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাননি। গত মাসে কেন্দ্র থেকে রাজ্যকে ৯৮০ কোটি টাকা ওই প্রকল্পের কাজের জন্য দেওয়া হয়।
রাজ্যের অ্যাকাউন্ট থেকে ‘ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার’ (এফটিও) পদ্ধতিতে শ্রমিকদের টাকা মেটানোর নতুন প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। আগে শ্রমিকদের বকেয়া টাকা আসত পঞ্চায়েতে। সেখান থেকে চেক বা ড্রাফট মারফত শ্রমিকদের টাকা দেওয়া হত। নতুন এই পদ্ধতিতে শ্রমিকদের কাজের পরিমাপ করে অনলাইনে টাকার আবেদন করে গ্রাম পঞ্চায়েত। রাজ্যের অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে সেই মজুরির টাকা ঢুকে যায়। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বাবদ বাঁকুড়ায় প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার আবেদন করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টাকা এখনও শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। শালডিহা পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ‘এফটিও’ করা হয়েছে। কিন্তু, সেই টাকা এখনও শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে আসেনি। এই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান টেলু কর বলেন, “যে সব শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের মজুরির পাওয়ার জন্য এফটিও করেছি। কিন্তু টাকা ঢোকেনি। এর জন্য আমরা দোষী নই।” তিনি জানান, এ দিনই মালপত্রের খরচ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতকে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের এফটিও করা হয়নি, তাঁদের বকেয়া মজুরি ওই টাকা থেকে মিটিয়ে দেওয়া হবে। কেন টাকা ঢুকতে দেরি হচ্ছে? একশ দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক বাবুলাল মাহাতো বলেন, “ব্যাঙ্কের প্রক্রিয়ার জন্যই একটু সময় লাগছে। তবে, এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।” পুজোর আগেই এই প্রকল্পের শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া যাবে বলে তাঁর আশ্বাস।