পাতলাপুর গ্রামে রান্নাঘর তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র
শপথ নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে লাড্ডু বিলি বা মিছিল নয়, কিছু অন্যরকম করতে চেয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের উলিয়াড়া অঞ্চলের পাতলাপুর গ্রামের বিজেপি কর্মীরা। সেই তাগিদ থেকেই এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রাতারাতি বাঁশ ও খড়ের চালা দিয়ে রান্নাঘর গড়ে দিলেন তাঁরা।
তবে, এই সাধু উদ্যোগও বিতর্কের ছায়া এড়াতে পারল না। কারণ, প্রশাসনকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর তৈরি করেছেন ওই বিজেপি কর্মীরা। আগাম জানানো হয়নি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদেরও। পাতলাপুরের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আওতায় ৭২টি শিশু ও ১৮ জন গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন। এলাকারই একটি ঘরে শিশুদের স্কুল বসানো হলেও রান্নাঘরের অভাবে রান্না ও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় গ্রামের রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নীচেই। জেলা প্রশাসনের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই এই কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু, কাজের কাজ হয়নি।
অবশেষে মোদীর শপথের দিনই এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না করার জন্য একটি চালা গড়ার সিদ্ধান্ত নেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। সেই মোতাবেক সোমবার সকালে স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার পরেই অঙ্গনওয়াড়ির স্কুল লাগোয়া এলাকায় বাঁশ ও খড় দিয়ে একটি চালা তৈরি করে দেওয়া হয়। বিষ্ণুপুরের বিডিও প্রশান্তকুমার মাহাতো বলেন, “প্রশাসনকে কিছু না জানিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য রান্নার চালা বানিয়ে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। তবে, অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরা চাইলে সেটি ব্যবহার করতে পারেন।” ব্লকের শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) দেবরঞ্জন রায় বলেন, “ওই গ্রামে জায়গা না পাওয়ায় আমরা সরকারি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বানাতে পারিনি। এক ব্যক্তির বাড়িতে কেন্দ্রটি চলছে। রান্নাঘর বানানোর আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল।”
পাতলাপুর গ্রামের বিজেপি নেতা কৃষ্ণপদ বাঙাল বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর না হওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল। সুদিন আসবে স্লোগান দিয়ে কেন্দ্রে আমাদের সরকার এসেছে। কিন্তু, এই রাজ্যের সরকারের উন্নয়ন করার কোনও ইচ্ছাই নেই। তাই আমাদের এই উদ্যোগ।” যদিও বিজেপি-র উদ্যোগকে কটাক্ষ করে বিষ্ণুপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মথুর কাপড়ি বলেন, “আজকাল বিজেপি বিভিন্ন ধরনের উদভট কান্ড বাঁধাচ্ছে প্রচারে আসার জন্য বিভিন্ন নাটক ফাঁদছে ওরা।”