বাইপাসের দাবি, অবরোধ দুবরাজপুরে

জনবহুল শহরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক ভাবেই দুবরাজপুর শহরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থার কয়লা বোঝাই ভারী ডাম্পারগুলি অহরহ ওই রাস্তা ধরে চালাচল করায় সমস্যা আরও বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০২:১৬
Share:

যানজট মুক্ত রাস্তা চাই। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জনবহুল শহরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক ভাবেই দুবরাজপুর শহরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থার কয়লা বোঝাই ভারী ডাম্পারগুলি অহরহ ওই রাস্তা ধরে চালাচল করায় সমস্যা আরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে তৈরি হয়েছে পথ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। তারই প্রতিবাদে এবং বাইপাস তৈরির দাবিতে রবিবার সকালে ৯টা থেকে মিনিট চল্লিশের প্রতীকী পথ অবরোধ করেন দুবরাজপুর শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এ ভাবে ভারী কয়লা বোঝাই গাড়িগুলি যাতে শহরের মধ্যে দিয়ে না যায়, সেটা সুনিশ্চত করুক প্রশাসন। প্রয়োজনে বিকল্প রাস্তা বা বাইপাস তৈরি করে নিক ওই খোলামুখ কয়লাখনি সংস্থা।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জ থেকে দুবরাজপুর শহরের মধ্যে দিয়ে সিউড়ি যাওয়ার ওই রাস্তাটি এক সময় গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক ছিল। ২০০৬ সালে রানিগঞ্জ থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ৬০-এর তকমা পায়। যানচালাচাল ওই রাস্তায় সীমিত থাকলেও বছর দু’য়েক আগে জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ- দুবরাজপুর শহর ঢোকার আগে পর্যন্ত অংশটি সংস্কার হওয়ার পর থেকে যানচলাচাল রীতিমত বেড়ে যায়। কিন্তু শহরের মধ্যে ওই রাস্তার হাল শোচনীয় থাকায় গাড়ি চলচল সাবধানেই হত। কিন্তু শহরের পোদ্দারবাঁধ, দুবরাজপুর থানা বা ইসলামপুর যানজট লেগেই থাকত। তখন থেকেই দুবরাজপুর পুরসভার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে বাইপাসের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু ভবিষ্যতে বাইপাস হবে এমন আশ্বাস প্রশাসনের তরফে নেই। মাস ছ’য়েক আগে দুবরাজপুর শহরের মধ্যে থাকা রাস্তাও সংস্কার করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পর থেকেই বেপরোয়া যানচালাচল বেড়েছে, বেড়েছে গড়ির সংখ্যাও। তার মাঝেই সমস্যা বাড়িয়েছে খয়রাশোলে অবস্থিত একটি খোলামুখ বেসরকারি সংস্থার কয়লা বোঝাই ডাম্পারগুলি।

বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয় ওই কয়লা। আগে অন্ডাল-সাঁইথিয়া রেলপথে মালগাড়িতে যেত কয়লা। পরে বক্রশ্বরে কয়লা পাঠানোর জন্য সড়ক পথ বেছে নেয় ওই সংস্থা। শহরবাসীর আপত্তি মূলত ১৮-২০ টন বা তারও বেশি কয়লা বোঝাই ওই গাড়িগুলিকে ঘিরেই। অবরোধে সামিল মতিউর রহমান, তারক নায়ক, মাধব দে, শঙ্খরূপ মখোপাধ্যায়দের দাবি, “এমতিতে ব্যস্ত রাস্তায় যানযটের সম্ভাবনা থাকেই। সেটা অনেক বেড়েছে কয়লাবোঝাই ভারী ডাম্পারগুলির জন্য। কারণ, আয়তনে বিশাল গড়িগুলি রাস্তা দিয়ে গেলে শহরের সঙ্কীর্ণ রাস্তায় অন্য গড়ি যাতায়াতের অবকাশ থাকে না। যখন তখন যানজট লেগে যায়। নাকাল হন পথচারি, স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ। তার থেকে মুক্তি পেতেই বাইপাস অবশ্যই প্রয়োজন। সেটার ব্যবস্থা সংস্থাকেই করতে হবে।”

Advertisement

খয়রাশেলের খোলামুখ কয়লা খানি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিমাইচন্দ্র মুখোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, “এমন অসুবিধার কথা আগে কেউ আমাকে জানাননি। এ দিনের অবরোধের কথাও জানা নেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, “আমরা কয়লা উত্তোলন করি মাত্র। কয়লাও আমাদের নয়। পিডিসিএলের। তা ছাড়া, যে গাড়িগুলিতে করে কয়লা নিয়ে যাওয়া-আসা হয় সেগুলি স্থানীয় মানুষের।” পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “বাসিন্দাদের দাবি ন্যায্য। যানজট সমস্যা মেটাতে বাইপাস অবশ্যই দরকার। সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement