এখনও রয়েছে অভিষেকের সভার ব্যানার। —নিজস্ব চিত্র
দিল্লিতে পিসি অর্থাৎ দলনেত্রী। তাই বাতিল হয়ে গেল তৃণমূলের ‘যুবরাজ’-এর সভা। আজ, শনিবার পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে যুব তৃণমূলের সভা হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ক্ষুব্ধ দলের কর্মী-সমর্থকেরা। কেউ কেউ বললেন, “সভার দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও সভা বাতিল। এক বার বা দু’বার নয়। এরকম ঘটল একাধিকবার। কী আর করা বলব!”
দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের বঞ্চনা এবং বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস রাজ্যে ‘নৈরাজ্য’ সৃষ্টি করছে। তার প্রতিবাদে গত ২ ডিসেম্বর শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে প্রকাশ্য সভার ডাক দিয়েছিল যুব তৃণমূল। এই সভায় মূল বক্তা ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গত ৩০ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপির সভার পরের দিন অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে তৃণমূলের সভার কারণেই বাতিল হয় পুরুলিয়ার সভা। কিন্তু এই সভার জন্য গোটা জেলা জুড়ে পোস্টার-ব্যানার দেওয়ার পাশাপাশি প্রচারও করা হয়েছিল। একেবারেই শেষ মুহূর্তে খবর আসে পুরুলিয়ার সভা বাতিল হচ্ছে। সংগঠনের এক নেতা বলেন, “এরপর ১৪ ডিসেম্বর সভা করার দিন ঠিক হয়। সেই মতো সব এগোচ্ছিল। প্রচারও হয়ে যায়। কিন্তু পাওয়া যায়নি রাজ্য যুব সভাপতির দিনক্ষণ।” সংগঠন সূত্রে খবর, ২ ডিসেম্বর সভা বাতিল হওয়ার পরে ফের ২০ ডিসেম্বর দিন ঠিক হয়। সভাস্থল অবশ্য অপরিবর্তিত থাকে। যুবনেতার সম্মতিতেই পরিবর্তিত সভার দিন ঠিক হয়েছিল। কেন না গত ২৬ নভেম্বর শহরের এই জায়গাতেই সভা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। পরের বছর পুরভোট। তাই শহরের সংগঠনকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি সেই সভার ভিড়কে টেক্কা দেওয়া ছিল এই সভার লক্ষ্য।
শহরের কর্মীরাই নন, জেলার বিভিন্ন ব্লকে কর্মীদের শহরে নিয়ে আসার জন্য বাস বা অন্য গাড়িও ঠিক করে ফেলেছিলেন ব্লকের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার রাতেই খবর আসে যে শনিবারের সভা নাও হতে পারে। শুক্রবার সকালে জেলার যুব নেতাদের কাছে সভা বাতিলের খবর পৌঁছয়। থেমে যায় মঞ্চ বাঁধার কাজও।
জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “দিল্লিতে বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে রাজ্য যুব সভাপতি এখানের সভায় থাকতে পারবেন না। তাই পুরুলিয়ার সভা পিছোচ্ছে।” কবে এই সভা হবে? তিনি বলেন, “চলতি মাসের শেষের দিকে এই সভা হবে।” যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সুশান্ত মাহাতো বলেন, “এ দিন সকালেই সভা বাতিলের খবর পেয়েছি।” কিন্তু কর্মীদের ক্ষোভ চাপা থাকেনি। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কর্মীরা বলেন, “বারবার সভা বাতিল হচ্ছে। কবে সভা হবে, তা উনিই জানেন!”