পড়ে নষ্ট হচ্ছে খেলার সরঞ্জাম

প্রাপকদের তালিকাই চূড়ান্ত হয়নি। তাই এক বছর আগে থেকে খেলাধুলার সরঞ্জাম এসে পড়ে থাকলেও তা বিলিই করতে পারেনি ব্লক যুবকল্যাণ দফতর। ঘটনাটি দুবরাজপুর ব্লকের। রাজনৈতিক চাপানউতোর, না কি প্রশাসনিক গাফিলতি এর জন্য দায়ী এই নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে ঘটনা হল যুবসমাজ ও ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ ইউথ সার্ভিস অ্যান্ড স্পোর্টসের দেওয়া সরঞ্জাম কাজেই লাগনো গেল না বছরখানেক ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২০
Share:

প্রাপকদের তালিকাই চূড়ান্ত হয়নি। তাই এক বছর আগে থেকে খেলাধুলার সরঞ্জাম এসে পড়ে থাকলেও তা বিলিই করতে পারেনি ব্লক যুবকল্যাণ দফতর। ঘটনাটি দুবরাজপুর ব্লকের। রাজনৈতিক চাপানউতোর, না কি প্রশাসনিক গাফিলতি এর জন্য দায়ী এই নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে ঘটনা হল যুবসমাজ ও ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ ইউথ সার্ভিস অ্যান্ড স্পোর্টসের দেওয়া সরঞ্জাম কাজেই লাগনো গেল না বছরখানেক ধরে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শ্যামল মণ্ডল বলেন, “কেন আগের বারের খেলার সাজ-সরঞ্জাম বিলি করা যায়নি তা খতিয়ে দেখছি।”

Advertisement

দুবরাজপুর ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, দুবরাজপুরের ১০টি পঞ্চায়েত এলাকার মনোনিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাবগুলিতে বিলি করার জন্য বছর খানেক ধরে ৮০টি ফুটবল, ৫০টি ভলিবল, ১২টি ভলিনেট, ২টি ক্রিকেট সেট, ১টি হাইজাম্প স্ট্যান্ডের মত সাজসরঞ্জাম মজুত রয়েছে। কেন বিলি করা গেল না? ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, নির্দেশিকা অনুসারে ওই খাতে আসা সরঞ্জাম বিলি করতে হলে এলাকার বিধায়কদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী করতে হবে। জটিলতা শুরু এখান থেকেই। দুবরাজপুরের মোট ১০টি পঞ্চায়েত এলাকার ৬টি রয়েছে দুবরাজপুর বিধানসভার অন্তর্গত। বর্তমানে এই কেন্দ্রের বিধায়ক ফব-র বিজয় বাগদি। আর বাকি ৪টি পঞ্চায়েত এলাকা রয়েছে সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের স্বপনকান্তি ঘোষ। বিজয় বাগদি একটি তালিকা দিলেও স্বপনবাবু প্রাপকদের কোনও তালিকাই দেননি বলে জানা গিয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় তৃণমূল। তাই বাম বিধায়কের দেওয়া তালিকা পঞ্চায়েত সমিতির মনে ধরেনি। সেই জন্যই খেলার সরঞ্জাম বিলি হয়নি। বিজয়বাবু বলেন, “আমাদের মনোনিত তালিকা না পাঠালে খেলার সামগ্রী বিলি হবে না। এ কথা সরকারি ভাবে আমায় জানানো হয়নি।” অন্য দিকে, তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ বলেন, “দুবরাজপুরে আমার লোকেরা রয়েছে। তারা এখনও তালিকা দেয়নি। সেটা আমার জানা নেই। তবে আমার সিউড়ি ও রাজনগরে আসা খেলার সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে।” দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যেহেতু ব্লক যুব কল্যাণ দফতরের কাছে স্টোর রুম নেই, তাই ওই খেলাধুলার সরঞ্জাম আমার অফিসের একটা রুমে রাখা হয়েছে জানি। তবে এ বিষযে ব্লক যুবকল্যাণ আধিকারিকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হওয়ার কথা।” দুবরাজপুর ব্লকের যুবকল্যাণ আধিকারিক বাপ্পা হালদার অবশ্য বলেছেন, “আমি শুধু বলব নির্দেশিকা অনুযায়ী তালিকা না পাওয়ার জটিলতা থেকেই ওগুলি বিলি করা যায়নি।”

Advertisement

ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির মাধ্যমে খেলার সামগ্রী বিলি করার প্রস্তাব এলেও সেটা মানা সম্ভব হয়নি। খেলাধুলার সাজ-সরঞ্জাম শুধু গত বারের বরাদ্দ নয়। মাঝে আরও একটি বরাদ্দ এলেও তা ওই জটিলতার কারণেই ব্লক পর্যন্ত পৌঁছয়নি। কিছুদিনের মধ্যে ফের এ বছরের বরাদ্দ আসতে চলেছে। তখন কী হয় সেটাই চিন্তায় ফেলেছে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের। দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের তনুশ্রী ঘোষ অবশ্য বলছেন, “শীঘ্রই স্বপনকান্তি ঘোষের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করব এবং বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে প্রাপ্ত তালিকা নিয়ে বিজয়বাবুর সঙ্গে আলোচনা করে প্রাপকদের তালিকা চূড়ান্ত করে বিলি করার কথা ভাবা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement