ইন্দিরা আবাস যোজনা নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। ঘটনাটি রঘুনাথপুর থানার চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েতের। ওই পঞ্চায়েত এলাকা থেকে জেতা রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ্য, তৃণমূলের সুশান্ত পান্ডের অভিযোগ, “চোরপাহাড়ির কাদামাড়রা গ্রামের এক মহিলার নামে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পঞ্চায়েত। অথচ ওই মহিলা আগেই ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন।” বিষয়টি নিয়ে বিডিও-র (রঘুনাথপুর ১) কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন সুশান্তবাবু। বিডিও সুনীতিকুমার গুছাইত বলেন, “অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে উপভোক্তার নাম পঞ্চায়েত থেকে পাঠানো হয়েছে, উনি আগেই বাড়ি পেয়ে থাকলে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হবে।”
হিড়বাঁধের মলিয়ান পঞ্চায়েতের মতোই চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়েও দলের উপরে যথেষ্ঠ ক্ষুব্ধ স্থানীয় তৃণমূলের একটি অংশ। মূলত এই এলাকা থেকে জেতা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বাদ দিয়ে দলের অপর গোষ্ঠী নিজেদের ইচ্ছামতো পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ। সুশান্তবাবুর দাবি, “ইন্দিরা আবাস থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজ নিয়ে বিস্তর দুর্নীতি করছেন প্রধান, উপপ্রধান। ওই এলাকা থেকে জেতা আমাদের দলেরই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরির মদতেই এই ধরনের দুর্নীতি হচ্ছে।”
চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় ইন্দিরা আবাস যোজনায় মোট ১৪৯টি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পঞ্চায়েত। সম্প্রতি তার তালিকা পঞ্চায়েত থেকে স্থির করে ব্লকে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইন্দিরা আবাসের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত থেকে পাঠানো তালিকাই মূলত চূড়ান্ত হয়। সুশান্তবাবু বলেন “পঞ্চায়েত পরিচালনার কাজে যে স্বচ্ছতা নেই, ইন্দিরা আবাসের পাঠানো তালিকাই তার প্রমাণ।” চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান নূপুর মাহাতো অবশ্য বলেন, “আমাদের সময়ে ওই মহিলা (যাঁর বাড়ি তৈরি নিয়ে বিতর্ক) ইন্দিরা আবাসের বাড়ি পাননি। তাই কাদামাড়রা এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর নাম প্রস্তাব করায় সেই নাম ব্লকে পাঠানো হয়েছে। আর গোটা পঞ্চায়েত এলাকায় আগে কারা কারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, সেটা প্রধানের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।”
তবে, এ দিন ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্য দিকে, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হাজারিবাবু বলেন, “এই ঘটনাটি নিয়ে আমার কিছু জানাই নেই। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী জেলা পরিষদের সদস্যেরা পঞ্চায়েত পরিচালনার কাজে কোনও ভাবেই যুক্ত নন। বরং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্মে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত থাকেন। ফলে, পঞ্চায়েত পরিচালনার কাজে দুর্নীতির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার দায় সুশান্তবাবুর উপরেও বর্তায়।”