তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাঁকরতলা। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল হক কাদেরির দাদা শেখ কাজলের বাড়িতে। ওই ঘটনায় বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন কাজলের মেয়ে নৌরিন মুস্তারেক। খয়রাশোল কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিবারের অভিযোগ, খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য শেখ জয়নালের (যিনি তৃণমূলের প্রাক্তন খয়রাশোল ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায় খুনে অভিযুক্ত) অনুগামীরা ওই হামলা চালায়। গ্যাস সিলিন্ডার খুলে কাজলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় পুড়ে গিয়েছে বাড়ির দু’টি চার চাকা ও দু’টি মোটরবাইকও। কাজলের বোন তথা স্থানীয় বড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য কেনিজ রাশেদের দাবি, “জয়নালের লোকেরা দাদাকেও বেধড়ক মেরেছে। প্রাণে মারার জন্য দাদার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েছিল। বৌদি দুষ্কৃতীদের পায়ে ধরে কোনও রকমে দাদাকে বাঁচিয়েছেন।”
খয়রাশোলে তৃণমূলের দুই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষ এবং অশোক মুখোপাধ্যায়ের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। দু’জনেই খুন হয়ে গিয়েছেন। তার পরেও এলাকায় দলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব জারি রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে ঝাড়খণ্ডের একটি কয়লা খাদানের দখলদারি নিয়ে এলাকা অশান্ত রয়েছে। যার জেরে দু’বার বোমা ফেটে জখমের ঘটনাও ঘটেছে। এ দিন রাতের ঘটনা তারই জের। এ বারের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়নাল, অশোক মুখোপাধ্যায়ের খুনে অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই এলাকাছাড়া। পুলিশের খাতায় তিনি ‘পলাতক’। যদিও এ দিন রাতে তিনি ফোনে দাবি করেন, “ওই ঘটনায় আমি কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। আমার পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হতো, তা হলে আমি বাড়িতেই থাকতাম। গত কয়েক মাস ধরে আমি এলাকাতেই নেই।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “উজ্জ্বল কাদেরি আর তাঁর দলবলই বরং বারবার আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এলাকায় কয়লা-সহ নানা ক্ষেত্রে তোলাবাজির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল থেকেই এ দিনের ঘটনা ঘটেছে।”