এক বধূর গর্ভপাত করানোর জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠল কিছু গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। প্রহৃত চিকিৎসক বিধান মণ্ডল রাতে পুলিশের কাছে স্থানীয় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। খাতড়ার এসডিপিও কল্যাণ সিংহরায় বলেন, “চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” অন্য দিকে, রাইপুরের বিডিও-র কাছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ করেছেন বধূর স্বামী। বিধানবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, রাইপুরের জালুরডাঙা গ্রামের বাসিন্দা, এক অন্তঃসত্ত্বা বধূর প্রাথমিক অবস্থায় সন্তান নষ্ট হয়ে যায় গর্ভে। সেজন্য সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ওই বধূর স্বামী চিকিৎসকের কাছে আসেন। ওই বধূর গর্ভপাতের জন্য টাকা নিয়েছেন অভিযোগ তুলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ বিধানবাবুর। মঙ্গলবার রাতে থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই চিকিৎসক। অভিযুক্তেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তদের দাবি, “গর্ভপাত করানোর জন্য ওই চিকিৎসক দু’হাজার টাকা চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার টাকা নেওয়ার সময় তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়েছিল। তখনই আমরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম চিকিৎসকের কাছে। তাঁকে আমাদের কেউ মারধর করেনি।” ওই বধূর স্বামী বলেন, “আমি গরিব। তবু, ওই চিকিৎসককে ৫০০ টাকা দিয়েছি। পরে আরও ৫০০ টাকা চেয়েছিলেন উনি। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য টাকা কেন চাইছেন ওই চিকিৎসক, সেটা জানার জন্য কয়েক জনকে নিয়ে ওঁর কাছে গিয়েছিলাম। মারধর করা হয়নি।”
বিধানবাবু অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, “আমি কোনও টাকা নিইনি। টুসু পরবের সময় স্থানীয় কয়েক জন মোটা টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। ওদের দাবি মতো চাঁদা না দেওয়ায় ওরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মারধর করেছে।”
রাইপুরের বিডিও দীপঙ্কর দাস বলেন, “ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”