কর্মীদের মনোবলই অস্ত্র, বলছেন সিপিএম প্রার্থী

শেষ ব্রিগেড সভার সাধারণ মানুষের ভিড় থেকেই অক্সিজেন নিতে চান তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে কোনও মন্তব্যেও যেতে রাজি নন। তিনি দু’বারের বিধায়ক, মুরারইয়ের শল্য চিকিত্‌সক কামরে ইলাহি।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০১:০৯
Share:

প্রচারে প্রার্থী। দুবরাজপুরে কামরে ইয়াহি।—নিজস্ব চিত্র।

শেষ ব্রিগেড সভার সাধারণ মানুষের ভিড় থেকেই অক্সিজেন নিতে চান তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে কোনও মন্তব্যেও যেতে রাজি নন। তিনি দু’বারের বিধায়ক, মুরারইয়ের শল্য চিকিত্‌সক কামরে ইলাহি। বীরভূম কেন্দ্রের এ বারের সিপিএম প্রার্থী। শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই জোরকদমে প্রচার শুরু করেছেন। রবিবারই কর্মিসভা সেরে মিছিলে হাঁটলেন দুবরাজপুরের পথে। জেলার পোড়খাওয়া এই নেতা মুখে বলছেন, “আমার লড়াই ব্যক্তি শতাব্দী রায়ের সঙ্গে নয়। কামরে ইলাহির লড়াই নীতির লড়াই। তৃণমূল সরকারের গা জোয়ারির বিরুদ্ধে লড়াই।”

Advertisement

এমনিতে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলায় শাসক দল, বিরোধী প্রত্যেকেই জোরদার প্রচার শুরু করেছে। দেওয়াল লিখন, জনসভা থেকে কর্মিসভা তেতে উঠেছে ভোটের ময়দান। এক দিকে, দলীয় প্রার্থীর হয়ে সুর চড়িয়ে সিপিএম-কে ধুয়েমুছে সাফ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। উল্টো দিকে, সাম্প্রতিক অতীতে পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা প্রায় সর্বত্রই দলের হারে হতাশ হয়ে পড়েছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। এ রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লড়াই তো আরও কঠিন হয়ে গেল? গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে পরাজিত মুরারইয়ের প্রাক্তন বিধায়ক বলছেন, “ওই সব ফল প্রকাশের পরে দলীয় কর্মীরা তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে দলীয় নেতৃত্বও হতাশ হয়েছেন। কিন্তু দিন কয়েক আগেই আমাদের বিগ্রেড জনসভায় জনজোয়ার হয়েছে। তাতে দলীয় নেতা-কর্মীরা আবার মনোবল ফিরে পেয়েছেন।” সেই ফিরে পাওয়া মনোবলই প্রথম বার লোকসভা ভোটের প্রার্থীর অন্যতম সম্বল বলে তিনি জানিয়েছেন।

প্রচারে প্রার্থী। সৈয়দ সিরাজ জিম্মি রামপুরহাটে ।—নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

শতাব্দীর বিরুদ্ধে বিজেপি ‘সেলিব্রিটি’ প্রার্থী দাঁড় করানোয় ওই আসনে বামেদেরই সুবিধা করে দিল বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক মহল। তার উপরে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছেদ হয়েছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চায়ছে বাম নেতৃত্ব। তাই ‘ডাক্তার কামরে ইলাহিকে’ জেতাতে কোনও কসুর রাখতে চান না দলের কর্মী-সমর্থকেরা। তবে, এ জেলায় এখন মূল প্রতিদ্বন্দ্বী যে তৃণমূলই তা বিলক্ষণ জানেন বাম নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে শতাব্দী রায়ের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। তাই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শতাব্দীর বিরুদ্ধে লড়তে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নানা নীতিকেই বিঁধছেন কামরে ইলাহি। জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে দুরাজপুর ধর্মশালায় হওয়া কর্মিসভায় তাই তাঁকে বলতে শোনা গেল, “২০০৬ সালের পর থেকে দলের বিরুদ্ধে তৃণমূল মিথ্যা প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে তৃণমূল তারই ফল পেয়েছে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে।” তাঁর দাবি, তৃণমূল মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছে। মানুষ এখন তা বুঝতে পারছেন। আর এই উপলব্ধিই তাঁকে ওই আসনে জেতাবেন বলে মনে করছেন সিপিএমের এই প্রার্থী।

শনিবারই বোলপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অনুপম হাজরাকে নিয়ে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ায় একটি কর্মী সম্মেলন করলেন দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। নাম ঘোষণার পর থেকেই বোলপুরের প্রার্থীর সঙ্গে তাঁকে ছায়াসঙ্গীর মতো দেখা গিয়েছে। কিন্তু শতাব্দীর কোনও প্রচারে এখনও পর্যন্ত তাঁর দেখা মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement