কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের অবস্থান। সোমবার শান্তিনিকেতনে তোলা নিজস্ব চিত্র।
পাঠভবন এবং শিক্ষাসত্রের ছাত্রদের জন্য বিশ্বভারতীতে আসন সংরক্ষণ তুলে দেওয়া, এবং বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়মের প্রতিবাদে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, কর্মী ও আধিকারিকদের একাংশ উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের পদত্যাগ দাবি করলেন। সেই সঙ্গে, নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের সিবিআই তদন্তেরও দাবিও তুললেন। আজ মঙ্গলবার কর্মী, অধ্যাপক ও আধিকারিকদের মিলিত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। উপাচার্য অবশ্য এখন বিদেশে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছাত্রছাত্রীরা স্নাতকস্তরে ভর্তিতে ‘কোটা’ দাবি করে ক্লাস বয়কট, উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। তখনও অধ্যাপকসভা, কর্মিসভার সদস্যরা ‘কোটা’র দাবিকে সমর্থন জানান। তবে কর্মবিরতির ডাক এই প্রথম। সুশান্তবাবুর মেয়াদকালীন নিয়োগে অনিয়মের সিবিআই তদন্তের দাবিও এর আগে উঠেছে পদপ্রার্থীদের থেকে। এই প্রথম বিশ্বভারতীর অভ্যন্তর থেকে সেই দাবি উঠল। এই দুই দাবির সমর্থনে এ দিন সইসংগ্রহ করা হয়। তাতে উপাচার্যের প্রতি তাঁর সহকর্মীদের একাংশের যে অনাস্থা প্রকাশ্যে এসেছে, তা বিশ্বভারতীর শীর্ষ কর্তাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
অধ্যাপকসভার সম্পাদক রাজেশ কে ভেনুগোপাল বলেন, “আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি। তাঁর মেয়াদ কালে বেআইনি নিয়োগের সিবিআই তদন্তের আর্জি জানাব মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে।” কর্মিসভার সভাপতি দেবব্রত হাজারি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ প্রবর্তিত নীতি-নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না উপাচার্য।” অধ্যাপকসভার কোষাধ্যক্ষ কিশোর ভট্টাচার্য এবং আধিকারিক সভার সভাপতি প্রশান্ত মিশ্র নিয়োগের বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেন। এ দিন এই তিন সংগঠন সকাল ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক অবস্থান ও বিক্ষোভ দেখায় কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে। তবে পঠনপাঠন ও অন্যান্য কাজ তাতে বিঘ্নিত হয়নি।
সুশান্তবাবুর মেয়াদকালীন তৈরি হয়েছে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষকদের সংগঠন, বিশ্বভারতী ইউনির্ভাসিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন। পাঠভবন বা শিক্ষাসত্রের শিক্ষকরা তার সদস্য নন। এই সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “সংরক্ষণ নিয়ে আমরা গোপন ব্যালটে একটি ভোট গ্রহণ করছি। ফল প্রকাশ হলে সে বিষয়ে অবস্থান নেব।” নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, এ বিষয়ে অভিযোগগুলি আদালতে বিচারাধীন। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে হলে আদালতই দেবে। এ বিষয়ে তাঁদের কোনও অবস্থান নেই।
মঙ্গলবার কর্মবিরতির বাইরে থাকছে জরুরি বিভাগ ও বাত্সরিক পরীক্ষা। তবে মঙ্গলবার ক্লাস ছুটি, তাই পড়াশোনায় ক্ষতি হবে না।