প্রচার: রঘুনাথপুরে। নিজস্ব চিত্র।
সভা একটি। কিন্তু সভা ঘিরে তিনটে লক্ষ্য পূরণে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল ও যুব তৃণমূল।
তৃণমূলের শহিদ দিবস ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করতে আগামী ৩ জুলাই সোমবার রঘুনাথপুরে আসছেন যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনার পরে দলের তরফে এই জেলার পর্যবেক্ষক অভিষেক এই প্রথম পুরুলিয়ায় আসছেন। রঘুনাথপুর শহরের এ-টিম ময়দানের ওই সভায় রেকর্ড সংখ্যক জমায়েত করতে তৎপর দলীয় নেতৃত্ব।
দল সূত্রে খবর, ভাল জমায়েত করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপিকে তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, তৃণমূল এই জেলায় অনেক যোজন এগিয়ে রয়েছে। আবার দীর্ঘদিন পরে জেলার পর্যবেক্ষকের সভা ঘিরে সংগঠনে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে সব গুছিয়ে নেওয়াও অন্যতম উদ্দেশ্য। এর মধ্যে পুরুলিয়ায় দলে রদবদল হয়েছে। নতুন জেলা যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সুশান্ত মাহাতো দায়িত্ব পাওয়ার পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাই তাঁর প্রথম বড় কর্মসূচি। তাই তিনিও এই সভার প্রস্তুতিকে সামনে রেখে প্রতিটি ব্লকে ঘুরে যুব সংগঠনকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্লকের প্রতিটি সভাতেই বসে যাওয়া বা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া কর্মীদের সংগঠনে গুরুত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে ঘুরে বিধায়ক ও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে সভা করে ‘ব্যক্তি নয়, সংগঠন ও দলই মুখ্য’ এই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে।”
বস্তুত বিধানসভা ভোটের পরে সেই অর্থে পুরুলিয়ায় বড়মাপের দলীয় জনসভা করেনি তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়া সফর করলেও তা ছিল প্রশাসনিক জনসভা। তাই অভিষেকের সভাকে ঘিরে তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ায় বিজেপির সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার পরে দলীয় নেতা-কর্মীদের এই তৎপরতায় সন্তুষ্ট জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির মনোবল ধাক্কা দেওয়া যে এই সভার অন্যতম উদ্দেশ্য তা স্পষ্ট দলের সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি বিজেপির নেতারা এসে সভা করছেন। সামান্য কিছু ভিড় হচ্ছে। কিন্তু পুরুলিয়াতে তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই, এটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জমায়েতই বুঝিয়ে দেবে।
রঘুনাথপুরে সভা হবে বলে বেশি সক্রিয়তা এখানে দেখা যাচ্ছে। সভা সফল করতে কর্মীদের নিয়ে দু’বেলা বসছেন এলাকার বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি। এ-টিম ময়দান জেলার অন্যতম বড় মাঠ। আগে এই মাঠে অন্যান্য রাজনৈতিক দল সভা করলেও মাঠের অর্ধেক অংশ ভরেনি। কিন্তু অভিষেকের সভায় মাঠ ভরে যাবে, এই আশা নিয়েই পুরো মাঠ জুড়েই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মঞ্চ বাঁধা হচ্ছে মাঠের একেবার শেষ প্রান্তে।
বিধায়কের কথায়, ‘‘দলীয় পর্যবেক্ষক দীর্ঘদিন পরে রঘুনাথপুর শহরে জনসভা করতে আসছেন। এ বার সভার জমায়েত তাঁর অতীতের সভার জমায়েতকে ছাপিয়ে যাবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।”