যৌন নিগ্রহে সাজা যুবকের

বোলপুর আদালতের অতিরিক্ত সরকারি আইনজীবী তপন দাশ জানান, গত ৮ মে বোলপুর সংলগ্ন একটি গ্রাম থেকে সম্পর্কে মামার সঙ্গে আধার কার্ড করাতে বোলপুর আসে বছর দশেকের ওই বালিকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:৪৫
Share:

দিলখুশ আলম। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ হওয়ার মাত্র ৭০ দিনের মাথায় সাজা ঘোষণা হল নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহে দোষী যুবকের। প্রোটেকশন অব চিলন্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস বা পকসো আইনে দিলখুশ আলম নামে অভিযুক্তকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করেছিল বোলপুর আদালত। বুধবার আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কল্লোলকুমার দাস দোষীকে তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এক হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এ দিন এজলাসে সাজা কম ঘোষণার আর্জি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে চব্বিশ বছর বয়সি ওই যুবক।

Advertisement

বোলপুর আদালতের অতিরিক্ত সরকারি আইনজীবী তপন দাশ জানান, গত ৮ মে বোলপুর সংলগ্ন একটি গ্রাম থেকে সম্পর্কে মামার সঙ্গে আধার কার্ড করাতে বোলপুর আসে বছর দশেকের ওই বালিকা। শান্তিনিকেতন রোডের উপরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাছে রয়েছে আধার কার্ড কেন্দ্র। সেখানে একমাত্র কর্মী হিসেবে ছিল দিলখুশ আলম। মামাকে সে বলে নাবালিকার আধার কার্ড করাতে গেলে তার মা কিংবা বাবার আধার কার্ডের প্রয়োজন। এই কথা শুনে নাবালিকাকে সেখানে রেখেই গ্রামে ফিরে যান তার মামা। অভিযোগ, সেই সময় মেয়েটিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে যৌন নিগ্রহ করে দিলখুশ। পরে তার কান্নার আওয়াজে বাইরে লোক জমতে পারে সেই আশঙ্কায় তাকে ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে দেয়। ভয় পেয়ে বাইরে এসে মেয়েটি কাঁদতে থাকে। কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে স্থানীয় এক মহিলাকে সে সব ঘটনা বলে। মামা ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। তিনি ফিরে এলে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে বোলপুর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার দিনই সন্ধ্যায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪বি এবং পকসো আইনের ৮ ও ১২ নম্বর ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বোলপুর আদালতে মামলা শুরু হয়। এই মামলায় ১০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তপনবাবু জানান, দু’টি ধারা প্রমাণিত না হলেও দিলখুশের বিরুদ্ধে পকসো আইনের আট নম্বর ধারা প্রমাণিত হয়। অভিযোগ করেছিলেন নাবালিকার গ্রাম সম্পর্কে ওই মামা। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ও আদালতের ভূমিকায় আমরা খুশি। মেয়েটার বাবা নেই, মা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। সঠিক বিচার পেয়েছে সে।’’

Advertisement

মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন বোলপুর মহিলা থানার ওসি ঝুমুর সিংহ। এসডিপিও (বোলপুর) অভিষেক রায়ের কথায় ‘‘যে সমস্ত অভিযোগে নাবালিকার বিষয় উঠে আসছে, সেগুলিতে আমরা বিশেষ ভাবে নজর রাখছি। তদন্তকারী অফিসারেরাও তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন। নাবালিকা নিখোঁজই হোক কিংবা তাদের কোনও সমস্যা, আগামী দিনেও আমরা তৎপর থাকব।’’

মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদানকারীদের একাংশের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করতে হবে। আমাদের বাড়িতেও ছোট মেয়ে আছে। তাদের কথা ভেবেও প্রতিবাদ করা দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement