প্রতীকী ছবি
আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। মাঝে মাঝেই হালকা বৃষ্টি পড়ছে। এই রকম পরিবেশে মাঠের মধ্যে গাছতলায় ত্রিপল খাটিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন তিন জন যুবক। শুক্রবার গভীর রাতে কেরল থেকে রামপুরহাট ফেরা ওই তিন পরিযায়ী শ্রমিককে ১৪ দিন গৃহ নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে তিন জন যুবকের পরিবার তাঁদের বাড়িতে থাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাই এ দিন সকাল থেকে গাছতলাতেই আশ্রয় নেন তাঁরা। বিকেলে পুলিশ এসে তাঁদের স্থানীয় একটি স্কুলে নিয়ে যায়। রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও দীপান্বিতা বর্মণ বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জেনেই পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।’’
ওই তিন যুবকের মধ্যে দু’জনের বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। অন্যজনের বাড়ি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। রাজমিস্ত্রির কাজ করার জন্য মাস চারেক আগে কেরল গিয়েছিলেন তাঁরা। তিন দিন আগে রওনা দেন তাঁরা। ভেবেছিলেন বাড়িতে গিয়ে নিশ্চিন্তে কাটাবেন। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই তাঁদের বাড়ি ঢুকতে বাধা দেন পরিজনেরা।
মিঠুন দাস নামে এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘রাত ১টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পরে প্রথমে পাড়ায় আসি। বাড়িতে মা ও দাদা আছে। ওরা আমাদের বাড়িতে আসতে মানা করে।’’ বাড়িতে ঢুকতে না পেরে তাঁরা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। হাসপাতালে তাঁদের ১৪ দিন গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার কথা বলা হয়। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা সারারাত হাসপাতালে কাটানোর পরে সকালে রামপুরহাট থানায় যাই। সেখান থেকেও আমাদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পাড়াতে আসতেই পরিজনেরা ও পড়শিরা বাড়িতে ঢুকতে আপত্তি জানান। কাউন্সিলরকে ফোন করলেও সুরাহা হয়নি।’’ কাঞ্চন লেট নামে এক যুবক বলেন, ‘‘বাড়িতে একটাই ঘর। বাবা, মা ও দুই দাদা আছেন। পাশাপাশি কাকাদের বাড়ি আছে। বাড়িতে ঢুকতে গেলে পাড়ার লোকজন আপত্তি করছে বলে পরিবারের লোকজন জানায়।’’ একই ঘটনা ঘটে আরেক শ্রমিক, ছোটা দাসের ক্ষেত্রেও।
পরিবারের আপত্তি দেখে তিনজন যুবক গাছতলায় ঠাঁই নেন। পরিজনেরা তাঁদের মশারি ও খাবার পাঠিয়ে দেন। ত্রিপল খাটিয়ে সারাদিন থাকার পরে বিকেলে পুলিশ তাঁদের নিয়ে যায়।