—প্রতীকী চিত্র।
স্বামীহারা মহিলাকে খুনের অভিযোগে প্রতিবেশী তিন মহিলাকে গ্রেফতার করেছে ময়ূরেশ্বর থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ময়ূরেশ্বরের বেজা গ্রামে, বছর চল্লিশের বিধবা প্রতিমা দাসের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশী বুদ্ধদেব মণ্ডলের বাড়ি থেকে। প্রতিমাকে খুনের অভিযোগে বুদ্ধদেবের স্ত্রী পলি মণ্ডল, পুত্রবধূ প্রিয়াঙ্কা এবং শাশুড়ি ভবানী মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী কারণে প্রতিমাকে খুন করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে হাজির করে মূল অভিযুক্ত হিসাবে পলি মণ্ডলকে জেরা করার জন্য সাত দিন নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিশ। সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি জানিয়েছেন, বিচারক শোহন মুখোপাধ্যায় পলির ৩ দিন পুলিশ এবং বাকি দু’জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত মহিলা বছর কুড়ি আগে স্বামীকে হারান। তার পর থেকে তিনি বাপের বাড়ি বেজা গ্রামে থাকতেন। প্রতিমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে তারাপীঠ একটি হোটেলে কাজ করেন। গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। বুধবার সকালে কাজ করতে বেরিয়ে যান। কিন্তু, দুপুর পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। গ্রামবাসীদের দাবি, খোঁজাখুঁজির করার সময় বুদ্ধদেব মণ্ডলের পরিবারের মহিলাদের আচরণে সন্দিহান হয়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বুদ্ধদেবের নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে প্রতিমার দেহ উদ্ধার করে। মৃতার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মৃতদেহ উদ্ধার করার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনার সময় ওই বাড়িতে বুদ্ধদেব বা অন্য কোনও পুরুষ ছিলেন না। পুলিশ প্রথমে বুদ্ধদেবের স্ত্রী, পুত্রবধূ ও শাশুড়িকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুদ্ধদেবের তিন ছেলে বাইরে কাজ করেন। বুদ্ধদেবকেও এ দিন গ্রামে পাওয়া যায়নি। পুলিশ এখনও খুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারেনি। তবে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান।
নিহত মহিলার ভাইপো ঈশ্বর দাসের দাবি, ‘‘পিসির সঙ্গে কারও কোনও সম্পর্ক ছিল না। পলি মণ্ডল সন্দেহবাতিক মহিলা। গ্রামের বিভিন্ন মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে স্বামীকে সন্দেহ করত। সেই সন্দেহের বশবর্তী হয়েই পিসিকে বাড়িতে ডেকে খুন করেছে।’’ পুলিশ জানায়, পলিকে জেরা করে খুনের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে। আরও কেউ জড়িত ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।